ঢাকা মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর, ২০২৫

পদ্মা সেতু দক্ষিণে মসজিদ নির্মাণ নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৭

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২৫, ১১:৩৪ পিএম

শরীয়তপুরের পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানাধীন নাওডোবা ইউনিয়নে মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে লতিফ ফকিরের বাড়ির সামনে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম নাওডোবা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের (আরএস-৬ প্রজেক্ট এলাকা) একটি মসজিদ নির্মাণকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এক পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলাম রাজিব ফকির ও তার বাবা লতিফ ফকির, অপর পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন ফয়জুল মাদবর ও সাবেক চেয়ারম্যান কাশেম ব্যাপারী।

গতকাল সোমবার সকালে এই মসজিদ নির্মাণ নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত অধিকাংশই মসজিদ নির্মাণের পক্ষে মত দেন, তবে লতিফ ফকির ও তার ছেলে রাজিব ফকির এর বিরোধিতা করেন।

অভিযোগ রয়েছে, বৈঠকে উপস্থিত না হয়েও রাজিব ফকির হঠাৎ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাশেম ব্যাপারীকে পায়ে কুপিয়ে আহত করেন। এর পরপরই উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয় এবং টানা ২০-২২টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় অন্তত সাতজন আহত হন।

স্থানীয়দের ধারণা, দুই গ্রুপের মধ্যেই আগে থেকে সংঘর্ষের প্রস্তুতি ছিল। ঘটনার পরপরই পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে, যে কোনো সময় বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দা কোরবান মাদবর বলেন, ‘দুই-তিন মাস ধরে এখানে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ চলছে। মসজিদের মালামালও এনে রাখা হয়েছে। কিন্তু শুরু থেকেই লতিফ ফকির ও তার লোকজন বাধা দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ (গতকাল) সকালে সালিশ চলাকালীন লতিফ ফকিরের লোকজন হঠাৎ হামলা চালায়, এতে কয়েকজন আহত হন।’

অন্যদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে লতিফ ফকিরের স্বজনেরা বলেন, ‘ওই জায়গায় লতিফ ফকিরের একটি ক্লাব রয়েছে, যা স্থানীয় যুবকদের আড্ডা ও সামাজিক কর্মকা-ের স্থান। কাশেম ব্যাপারী ও তার লোকজন জোর করে সেটি ভেঙে দখল করতে চাইছে। তারা আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে।’

তারা দাবি করেন, ‘মসজিদের বিষয়টি আসলে অজুহাত। এলাকায় অস্থিরতা সৃষ্টি এবং জায়গা দখল করাই তাদের আসল উদ্দেশ্য। এখানে আগে থেকেই মসজিদ রয়েছে।’

এ বিষয়ে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম রসুল বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি; অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’