- ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শেষ হবে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ
- দেড় লাখ পুলিশ নেবেন প্রশিক্ষণ, শেষ হয়েছে ৪৮ হাজারের বেশি সদস্যের
- নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন ৭ লাখ ৬৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য
- আইন ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ৯টি প্রশিক্ষণ মডিউলে দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ
- নির্বাচনে ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে মাঠে থাকবে
- মনোবল চাঙা রাখতে পুলিশের সদস্যদে দেওয়া হচ্ছে নানা ধরনের মোটিভেশন
- প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে গড়ে ১৩ জন নিরাপত্তা সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন
- এবারের নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকার প্রত্যয় পুলিশের উধ্বতন কর্তাদের
- সরকার চাইলে পুলিশ দিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব, দাবি বিশেষজ্ঞদের
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে সময় রয়েছে মাত্র তিন মাস। ভোটগ্রহণে সার্বিক নিরাপত্তায় একটি মুখ্য ভূমিকায় থাকে পুলিশ। প্রশ্ন উঠেছেÑ একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে বর্তমানে কতটা প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ? আওয়ামী সরকারের আমলে নির্বাচনগুলোয় পুলিশের ভূমিকা ছিল বেশ প্রশ্নবিদ্ধ। এ ছাড়াও জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় পুলিশের মারমুখি অবস্থানের কারণে পরবর্তীতে জনগনের দূরত্ব বাড়ে এ সংস্থার। যা এখনো স্বাভাবিক হয়নি পুরোপুরি। এরই মধ্যে জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে চ্যালেঞ্জিংয়ের মুখে পুলিশ। তবে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে কলঙ্ক মুছতে চায় পুলিশ। বিষয়টি মাথায় রেখেই নির্বাচনে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য দেড় লাখ পুলিশকে প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪৮ হাজারের বেশি সদস্যের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রশিক্ষণ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এদিকে নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে শক্তিশালী করার ওপর জোর দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরইমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানরাও নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার ক্ষেত্রে যথাযথ ভূমিকার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দাবি, অরাজনৈতিক সরকারের আমলে নির্বাচন হওয়ায় পুলিশ অতীতের মতো এবার প্রভাবিত হবে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার মধ্যে পুলিশের সক্ষমতা নির্ভর করছে সরকারের সদিচ্ছার ওপর। সরকার যদি চায় তাহলে পুলিশ তার পেশাদারিত্বের জায়গায় নিরপেক্ষতা বজায় রেখে পক্ষপাতিত্বহীনভাবে আইনের প্রয়োগ করার ক্ষমতা এখনো আছে। তবে যেকোনো অজুহাতে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা কিংবা নির্বাচনকে পেছানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। এ ছাড়া বাংলাদেশে নির্বাচনের সময় নানা ধরনের অগণতান্ত্রিক ও নির্বাচন শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ হয়ে থাকে। পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘটিত প্রতিযোগিতায় অস্ত্রসহ নানা ধরনের পেশিশক্তির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও জননিরাপত্তার প্রশ্নে উদ্ধারবহির্ভূত লুণ্ঠিত ও অবৈধ অস্ত্র বড় ঝুঁকি, নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশের জন্য যা বেশ বড় চ্যালেঞ্জ।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে পুলিশের নির্বাচনি প্রশিক্ষণ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এদিন রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে পুলিশ সদস্যদের এ ধরনের প্রশিক্ষণ আয়োজন এবারই প্রথম বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। এরইমধ্যে পুলিশের ৪৮ হাজারের বেশি সদস্য প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। পুলিশের প্রায় দেড় লাখ সদস্য আগামী সংসদ নির্বাচনে মাঠপর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের প্রত্যেকের কর্মকা- জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিরীক্ষিত হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রত্যেক পুলিশ সদস্যকে দক্ষ ও সুশৃঙ্খল হিসেবে গড়ে তোলাই নির্বাচনি প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতনরা। পুলিশ সদস্যকে আইন ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে পুলিশ সদর দপ্তরের মানবসম্পদ বিভাগ প্রণীত ৯টি প্রশিক্ষণ মডিউলের আওতায় এ নির্বাচনি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশের কনস্টেবল থেকে উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাচনের আচরণবিধি, ভোটারের অধিকার, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা, আইন অনুযায়ী পুলিশের দায়িত্ব, নির্বাচনের আগে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ, নির্বাচনি সামগ্রী, ভোটকেন্দ্র ও বুথের নিরাপত্তা, নির্বাচনি সহিংসতা দমন ও নির্বাচন-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা নিয়ে পুলিশ সদস্যরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। পাশাপাশি মনোবল চাঙা রাখতে নানা ধরনের ‘মোটিভেশন’ দেওয়া হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মোট ৭ লাখ ৬৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য- যাদের মধ্যে পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং আনসার ও ভিডিপি সদস্য নিরপেক্ষ এবং দক্ষভাবে দায়িত্ব পালনে নির্বাচন-সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। পুলিশ সদস্য ছাড়াও ৫ লাখ ৮৫ হাজার আনসার ও ভিডিপি সদস্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। যার মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার সশস্ত্র এবং ৪ লাখ ৫০ হাজার নিরস্ত্র সদস্য রয়েছেন। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে গড়ে ১৩ জন নিরাপত্তা সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। অন্যদিকে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৩৩ হাজার সদস্য নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করছেন, যা ডিসেম্বরের ৩১ তারিখের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যেই সব প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হবে। এ ছাড়াও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে মাঠে থাকবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক আবু নাসের মোহাম্মদ খালেদ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে পুলিশ যাতে কোনো অপেশাদার কাজ না করে, সেটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। সে জন্যই এবার পুলিশ সদস্যদের নির্বাচনি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের প্রায় দেড় লাখ সদস্য আগামী নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ ও সুশৃঙ্খল হিসেবে গড়ে তোলাই প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য। প্রশিক্ষণে সবাইকে আইনকানুন, বিধিবিধানসহ কার কতটুক দায়িত্ব সেগুলো পর্যন্ত শিখানো হচ্ছে। সুতরাং আমরা মনে করছি, পুলিশ কারো দ্বারা প্রভাবিত হবে না। আমরা আশাবাদী, প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হলে সবার মনোবল অনেক বৃদ্ধি পাবে। ভালো একটা নির্বাচনের জন্য সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
নির্বাচনে পুলিশ রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হবে কি না? এমন এক প্রশ্নের উত্তরে অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক বলেন, ‘বর্তমানে কোনো রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় নেই। এখন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে, সুতরাং পুলিশ কারো দ্বারা প্রভাবিত হবে না বলেই আশা করি। এ ছাড়া রাজনৈতিক দলের চাপ মোকাবিলায় নিরপেক্ষতা বজায় রেখে আইন প্রয়োগের জন্যই পুলিশ সদস্যদের প্রস্তুত করা হচ্ছে।’
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র বলছে, নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের মধ্যে মাত্র ৯ থেকে ১০ শতাংশ পুলিশ। সীমিত জনবলের সংকট কাটাতে তাই স্থানীয় প্রশাসন ও সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। এ ছাড়া ভুয়া খবর ছড়িয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করা, পুরোনো ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোসহ সাইবার হুমকি মোকাবিলায় ফরেনসিক দল গঠন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেষ্টা করবেন, যা মোকাবিলায় নির্বাচনের আগে গ্রেপ্তার অভিযান আরও জোরদার করা হবে। বিদেশে পালিয়ে থাকা নেতাকর্মীদের তৎপরতার ওপরও নজরদারি করা হবে।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নূর মোহাম্মদ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘নির্বাচনি দায়িত্ব তো আর পুলিশ একা পালন করবে না। এখানে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। যদিও এক বছরে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি পুলিশ, তারপরও এই পুলিশকে দিয়েই ভালো নির্বাচন করা সম্ভব। এখন যারা দায়িত্ব পালন করছেন তাদের আস্থায় নিয়ে কাজ করতে হবে। তাদের সুযোগ দিতে হবে। এখনো আসামি গ্রেপ্তারের পর থানা ঘেরাও হচ্ছে, এগুলো বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের অভিযানটি কার্যকরভাবে করতে হবে। তাহলেই সম্ভব।’
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যায় বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের পরে পুলিশের নৈতিক অবস্থান খুব মোটা দাগে কমে গেছে। জনগণের মধ্যে পুলিশকে পাত্তা না দেওয়া, তাদের অবস্থানকে নিচু করে দেখার স্বভাবও বিরাজমান। তার মধ্যেও পুলিশ তার স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এখন সরকার যদি মনে করে, পুলিশকে আমরা (কনফিডেন্স) আত্মবিশ^াস জোগাবÑ তোমরা নিরপেক্ষভাবে কাজ করো, সেই ক্ষেত্রে পুলিশের মধ্যে একটা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে। সরকার পুলিশকে আত্মবিশ্বাস জোগালে পেশাদারিত্বের জায়গায় নিরপেক্ষতা বজায় রেখে পক্ষপাতিত্বহীনভাবে আইনের প্রয়োগে করার ক্ষমতা এখনো সংস্থাটির আছে।’
একটা বাহিনীর মনোবল পুরোপুরি হারিয়ে যায় না, পোশাকি চাকরির এটাই হচ্ছে বড় শক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পুলিশ ট্রমায় থাকা সত্ত্বেও পেশাদারিত্ব অর্জন করে দায়িত্ব পালন করতে পারে, যদি কেবল তা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সেই নিশ্চয়তা পায়Ñ তোমাকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হলো। নির্বাচনের সময় তাদের দায়িত্ব পালনে বাধা আসার যে সম্ভাবনা রয়েছে বা তাদের পেশাদারিত্বের জায়গায় যদি দুর্বলতা থাকে, এ জায়গা থেকে পুলিশকে উত্তরণের বিষয় সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করছে।’
জানা গেছে, বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য সহিংসতা মোকাবিলায় পুলিশের উদ্বেগের একটা বড় কারণ হচ্ছে থানা ও ফাঁড়ি থেকে লুট হওয়া অনেক অস্ত্র উদ্ধার না হওয়া এবং অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র। নির্বাচনি সহিংসতায় এসব অস্ত্র ব্যবহৃত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, এসব অস্ত্রের কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছে যেতে পারে, কিছু পাহাড়ি কিংবা আরসার হাতে যেতে পারে। তাই নির্বাচনের আগে এসব অস্ত্র উদ্ধারে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচনের সময় নানা ধরনের অগণতান্ত্রিক ও নির্বাচন শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ হয়ে থাকে। পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘটিত প্রতিযোগিতায় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রসহ নানা ধরনের পেশিশক্তির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তাই গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রশ্নে যত ধরনের ঝুঁকি বা শঙ্কা বিদ্যমান তা দ্রুত সমাধানে প্রাধান্য দিতে হবে। এ ছাড়া লুট হওয়া অস্ত্র যত বেশি সময় উদ্ধারের বাইরে থাকবে, আইনশৃঙ্খলার জন্য চ্যালেঞ্জও তত বাড়বে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও জননিরাপত্তার প্রশ্নে উদ্ধারবহির্ভূত লুণ্ঠিত অস্ত্র বড় ঝুঁকি। বেহাত অস্ত্রে আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংঘাত-সহিংসতার শঙ্কা থেকেই যায়। ফলে বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সম্প্রতি সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। নির্বাচনকে মুক্ত ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোকে প্রদান করা হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে।’
নির্বাচনে পুলিশ কোনো দলকে বিশেষ সুবিধা দিলে তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবেÑ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ‘ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে কারো কোনো অবহেলা থাকলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। আগে এক্ষেত্রে জিডি করে রাখা হতো। এবার কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হবে।’

