ঢাকা মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৫

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি

রেহানার ৭, হাসিনার ৫ টিউলিপের ২ বছর কারাদণ্ড

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২৫, ১১:৪০ পিএম

রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার করে শেখ রেহানার ১০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলাটিতে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে ৫ বছর কারাদ-, তার বোন শেখ রেহানার ৭ বছর কারাদ- ও মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের ২ বছর কারাদ- দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও অন্য ১৪ জন অভিযুক্তকে বিভিন্ন মেয়াদে কারা ও অর্থদ- দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে ঢাকার বিশেষ জজ-৪এর বিচারক রবিউল আলম রায় এ ঘোষণা করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলায় শেখ রেহানা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়।

গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ-৪এর বিচারক রবিউল আলম রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এদিন ধার্য করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলার তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরও দুই আসামিসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।

এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেনÑ জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, তদন্তে পরবর্তীতে যুক্ত হওয়া দুই আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এই মামলায় ৩২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।

হাসিনা, রেহানা, টিউলিপ আইনজীবী না পাওয়ার ব্যাখ্যা দিলেন বিচারক

প্লট দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং রেহানার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক কেন আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ পাননি, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিচারক। রায়ের পর্যবেক্ষণে এর কারণ ব্যাখ্যা করে বিচারক রবিউল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ায় পৃথিবীর যেখানে অবস্থান করুক না কেন সেই আসামিকে বিচার করতে আইনে কোনো বাধা নেই। কেবল মৃত্যুদ-ের ধারার মামলার ক্ষেত্রে পলাতক আসামির ক্ষেত্রে স্টেট ডিফেন্স (রাষ্ট্রনিযুক্ত) ল-ইয়ার নিয়োগ দেওয়ার বিধান রয়েছে। মৃত্যুদ-যোগ্য ধারা না থাকলে মামলায় পলাতক আসামির ক্ষেত্রে ডিফেন্স ল-ইয়ার নিয়োগ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদ-ের কোনো ধারার অভিযোগ না থাকায় আসামিদের জন্য ডিফেন্স ল-ইয়ার নিয়োগ প্রদানের কোনো সুযোগ নেই।’

এ মামলায় শেখ হাসিনা, রেহানা ও টিউলিপের পক্ষে আইনি লড়াই করতে আবেদন করেছিলেন মোরশেদ হোসেন শাহীন নামে এক আইনজীবী। তবে আদালত এ বিষয়ে কোনো আদেশ তখন দেননি। এ বিষয়ে মোরশেদ হোসেন শাহীন বলেন, ‘আদালত আমার আবেদন মঞ্জুরও করেননি, আবার খারিজও করেননি। আমার আসামিরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।’