মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ঢাকার কাঁচাবাজারগুলোতে এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকায়। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি পর্যায়ে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) পেঁয়াজের দাম রাখা হচ্ছে ৬৫০-৬৮০ টাকা। এর প্রভাবে খুচরা বাজারেও দাম ব্যাপক হারে বেড়েছে।
উত্তর বাড্ডার পেঁয়াজ বিক্রেতা আমিনুল হক বলেন, ‘গত মঙ্গলবারও (২ ডিসেম্বর) পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের কেজি ছিল ১০০ টাকা। এক পাল্লা বিক্রি হচ্ছিল ৪৮৫-৫০০ টাকায়, যা এখন ৬৮০ টাকা হয়েছে।’ আরেক ব্যবসায়ী রবিউল বলেন, ‘দুই দিনের ব্যবধানে কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা বেড়েছে। প্রতি বস্তায় দাম বেড়েছে ৮৫০ থেকে ১০০০ টাকা।’
মুড়িকাটা পেঁয়াজের দামও বাড়তি : রামপুরার পেঁয়াজ বিক্রেতা হারুনুর রশিদ বলেন, হঠাৎ দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। আগাম জাতের মুড়ি কাটা পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু হয়েছে। দাম কমার কথা, কিন্তু উল্টো বাড়ছে।’
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মুড়ি কাটা পেঁয়াজ এখন বাজারে অল্প পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে, তবে এর দামও কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। কিছুদিন আগেও যা ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, এখন তা কেজিতে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মমিনুল জানান, পুরোনো পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণে ক্রেতারা মুড়ি কাটা পেঁয়াজের দিকে ঝুঁকছেন। কিন্তু সরবরাহ কম থাকায় এর দামও বেড়ে গেছে। হঠাৎ এমন অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিতে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
রামপুরার ক্রেতা রাবেয়া আক্তার বলেন, ‘কীভাবে দুই দিনে পেঁয়াজের দাম ৫০ টাকা বাড়ে, কিছু বুঝতে পারছি না।’
আরেক ক্রেতা এহসানুল হক বাজার তদারকির অভাব নিয়ে অভিযোগ করে বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা যেভাবে ইচ্ছা বাজার চালাচ্ছেন। তদারকি না থাকলে ভোক্তাদেরই ভুগতে হবে।’
বাজার স্থিতিশীল রাখতে ক্রেতারা কঠোর নজরদারির দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, তদারকির অভাব থাকলে পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।
সীমিত আকারে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে : পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে আজ ৭ ডিসেম্বর থেকে সীমিত আকারে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। প্রতিদিন ৫০টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রত্যেকটি আইপিতে সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে। গতকাল শনিবার কৃষি মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ১ আগস্ট ২০২৫ থেকে অদ্যাবধি যেসব আমদানিকারক রপ্তানির অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন, তারাই শুধু আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন। একজন আমদানিকারক একবারের জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন। পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

