কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক চ্যাটবটগুলোর ওপর মানুষ নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। তবে এ নিয়ে মানসিক উদ্বেগও বাড়ছে। মনোরোগ-বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর চ্যাটবটের অপ্রত্যাশিত প্রভাব রয়েছে। বিশেষ করে এটি অস্তিত্বগত হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। তাই মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাবের বিষয়টি সতর্কবার্তা হিসেবে দেখা উচিত। কারণ, চ্যাটবটের সঙ্গে অতি বুদ্ধিমান
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আরও
উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
মনোচিকিৎসকদের আশঙ্কা, মানুষ যদি পেশাদার চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হয়ে চ্যাটবট থেকে নিজেই সহায়তা নেয়, তবে তারা গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষতিকর ভ্রান্ত ধারণাকে আরও তীব্র করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মেশিন ইন্টেলিজেন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট নেট সোয়ারেস ভবিষ্যৎ বিপদের সতর্ক সংকেত হিসেবে দেশটির কিশোর অ্যাডাম রেইনের সঙ্গে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক একটি ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। চ্যাটজিপিটির সঙ্গে কয়েক মাস ধরে কথোপকথনের পর রেইন আত্মহত্যা করেছিল।
গুগল ও মাইক্রোসফটের সাবেক প্রকৌশলী সোয়ারেস বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলো এআই চ্যাটবটকে সহায়ক ও নিরাপদ হিসেবে তৈরি করলেও এগুলো অপ্রত্যাশিত ও ক্ষতিকর আচরণ সৃষ্টি করতে পারে।
সোয়ারেস সতর্ক করে বলেন, এআই যদি অতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় (আর্টিফিশিয়াল সুপার-ইন্টেলিজেন্স) পরিণত হয়, তাহলে এই অনিশ্চয়তা আরও মারাত্মক আকার নিতে পারে। আর্টিফিশিয়াল সুপার-ইন্টেলিজেন্সের ক্ষেত্রে মানুষের সব ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক কাজকে অতিক্রম করতে সক্ষম হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রোগ্রাম।
উল্লেখ্য, মেটার প্রধান নির্বাহী ও এআই গবেষণায় বিনিয়োগকারী মার্ক জাকারবার্গ বলেছেন, অতি বুদ্ধিমত্তা তৈরি এখন ‘দৃষ্টিগোচর’। যুক্তরাষ্ট্রের কম্পিউটারবিজ্ঞানী ও গবেষক এলিয়েজার ইউডকাউস্কি ও নেট সোয়ারেস মিলে ইফ অ্যানিওয়ান বিল্ডস ইট, এভরিওয়ান ডাইজ নামে একটি বই প্রকাশ করেছেন। বইয়ে বলা হয়েছে, এআইয়ের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণহীন অগ্রগতি ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে। বইয়ে সোয়ারেস প্রস্তাব করেছেন, অতি বুদ্ধিমত্তার দিকে ছুটে চলা এ প্রতিযোগিতা থামাতে বিশ্বের সরকারগুলোকে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধের চুক্তির মতো বহুপক্ষীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
এদিকে এআই খাতের সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞরা এখনো বিভক্ত। মেটার প্রধান এআই বিজ্ঞানী ইয়ান লেকুন অস্তিত্বগত হুমকির দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, এআই মানবজাতির উপকারে আসতে পারে।

