শরীয়তপুরে রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখায় নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনার মূলহোতা সবুজ দেওয়ানকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী। গতকাল শনিবার ভোরে সদর উপজেলার বেড়া চিকন্দী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সবুজ দেওয়ান সদর উপজেলার ধানুকা এলাকার আবু তাহের দেওয়ানের ছেলে। এর আগে গত শুক্রবার রাতে এই ঘটনায় পালং মডেল থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন শিশুটির বাবা নূর হোসেন সরদার।
মামলার এজাহার, রোগীর স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর এলাকার নূর হোসেন সরদারের স্ত্রী রুমা বেগম সিজারিয়ান অপারেশনে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে একটি ছেলেসন্তানের জন্য দেন। নবজাতকটি কিছুটা অসুস্থ থাকায় তারা চিকিৎসকের পরামর্শে সেদিন রাতে ঢাকা নেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। তবে তাদের ভাড়া করা ঢাকাগামী অ্যাম্বুলেন্সটি যেতে বাধা দেয় স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্সচালক সিন্ডিকেট সবুজ দেওয়ান ও আবু তাহের দেওয়ান নামের দুই ব্যক্তি। একপর্যায়ে তারা ঢাকাগামী সেই অ্যাম্বুলেন্স চালকের কাছ থেকে জোর করে চাবি কেড়ে নিয়ে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এতে অ্যাম্বুলেন্সে ৪০ মিনিট আটকে থাকার পর শিশুটি সেখানেই মারা যায়।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা নূর হোসেন সরদার শুক্রবার রাতে সবুজ দেওয়ানসহ পাঁচজনকে আসামি করে সদরের পালং মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল ভোরে র্যাব ও পুলিশের যৌথ বাহিনী সবুজ দেওয়ানকে সদর উপজেলার বেড়া চিকন্দী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনায় অভিযুক্ত সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন রোগীর স্বজনরা। মামলার বাদী নূর হোসেন বলেন, ‘আমরা চাই এই ঘটনায় প্রত্যেক অপরাধীকে প্রশাসন দ্রুত গ্রেপ্তার করুক। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা আর কেউ ঘটানোর সাহস না পায়।’
র্যাব-৮ এর কোম্পানি কমান্ডার ও পুলিশ সুপার মীর মনির হোসেন বলেন, ‘সবুজ দেওয়ানকে গ্রেপ্তার করে পালং মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করতে আমরা প্রস্তুত আছি।’