ঢাকা রবিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৫

হাতিকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে চিকিৎসকসহ আহত ১৫, তিনজনকে নেওয়া হলো ঢাকায়

কক্সবাজার ব্যুরো
প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২৫, ০৬:১০ এএম

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আহত বন্য হাতিকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে হাতির আক্রমণে চিকিৎসকসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে তিনজনকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হেলিকপ্টারে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।

গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে রামু ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে বিজিবির আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। আহত বাকিরা কক্সবাজারের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিজিবির সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ঢাকায় নেওয়া আহতরা হলেনÑ কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. হাতেম সাজ্জাত মো. জুলকারনাইন, গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও সেভ দ্য ন্যাচার অব বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলা শাখার সদস্যসচিব মো. আতিকুর রহমান।

জানা যায়, গত শুক্রবার বিকেলে রামু উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রাজারকুল থোয়াইংগ্যকাটার বালুচড়া দক্ষিণের পাহাড়ে মাইন বিস্ফোরণে আহত হাতির চিকিৎসা দিতে গেলে চিকিৎসকসহ বন বিভাগের ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আহত হন। তাদের মধ্যে দুজন চিকিৎসকসহ তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ কারণে গতকাল তাদের বিজিবির হেলিকপ্টারে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. নুরুল ইসলাম বলেন, পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি বন রেঞ্জ থেকে খবর আসে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হাতিটি বর্তমানে রামু উপজেলার দারিয়ার দীঘি সংরক্ষিত বনে অবস্থান করছে। সে খবরের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার চিকিৎসকসহ বন বিভাগের ১৫ সদস্যের একটি দল নিয়ে রেঞ্জ কর্মকর্তা আলী নেওয়াজ দারিয়ার দীঘি সংরক্ষিত গভীর বনে যান। এ সময় কিছু বোঝার আগে হঠাৎ পেছন থেকে সবার ওপর আক্রমণ করে হাতিটি। এতে ১৫ জনের সবাই আহত হন। হাতিটি আক্রমণ করে একটি বন্দুকও কেড়ে নিয়ে বনের ভেতর ফেলে দিয়েছিল। পরে অনেক খুঁজে বন্দুকটি উদ্ধার করা হয়েছে।

বন কর্মকর্তা আরও জানান, গত ৩ আগস্ট নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে হাতিটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হয়। এতে হাতিটির সামনের ডান পা প্রায় অবশ হয়ে গেছে। ওই পায়ের তলা ও নখ উড়ে গেছে। বাকি তিনটি পায়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হচ্ছে হাতিটিকে। পায়ের ক্ষতের যন্ত্রণা নিয়ে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠছে হাতিটি। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি আহত হাতিটি যাতে সুচিকিৎসা পায়। চিকিৎসা দিতে গিয়ে বনকর্মীরা আহত হলেও এখন হাতিটির গতিবিধি আমরা লক্ষ্য রাখছি।

চিকিৎসকেরা বলছেন, রক্ত ও পানিশূন্যতায় হাতিটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। দীর্ঘমেয়াদে নিবিড় পরিচর্যা দরকার আহত হাতিটির।

বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফ জানান, হাতির আক্রমণে আহতদের মাঝে গুরুতরদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিজিবির হেলিকপ্টারে রামু ক্যান্টনমেন্ট থেকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।