- ঘর থেকে ১১ এনজিওর বই উদ্ধার
রাজশাহীর মোহনপুরে ১১ এনজিওর কাছে থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধের চাপে আত্মহত্যা করেছেন এক পানচাষি। গতকাল সোমবার সকালে বাড়ির পাশের একটি পানের বরজ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মৃত ওই পানচাষির নাম আকবর আলী শাহ (৫৫)। তিনি রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার খাড়ইল গ্রামের লোকমানের ছেলে। মৃতের বাসা থেকে ১১টি এনজিওর পাশ বই উদ্ধার করা হয়েছে। এসব এনজিও থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধের চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিহতের বড় ছেলে সুমন হোসেন শাহ জানান, প্রতিদিনের মতো তার বাবা পানের বরজ দেখাশোনার জন্য খুব ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ছয়জন শ্রমিক নিয়ে তিনিও পানের বরজে যান। সেখানে গিয়ে তার বাবাকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে পাশের আরেকটি বরজে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় বাবাকে দেখতে পেয়ে হতভম্ব হয়ে পড়েন। পরে শ্রমিকদের সহযোগিতায় মৃতদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ বাড়িতে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
রাজশাহীর মোহনপুর থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, আকবর আলী ও তার স্ত্রী সেলিনা বেগম বিভিন্ন এনজিওর সঙ্গে জড়িত। সেগুলো থেকে তিনি ঋণ নিয়েছিলেন। তার বাড়ি থেকে ১১টি এনজিওর পাশ বই পাওয়া গেছে। এসব এনজিও থেকে নেওয়া প্রায় ৭ লাখ টাকা ঋণ জমে যায়। ঋণ নিয়ে এনজিওগুলোর চাপে ছিলেন তিনি। পানের দাম কমে যাওয়ায় ঋণের কিস্তি দিতে পারছিলেন না। এ নিয়ে মানসিক চাপে ছিলেন তিনি।
আকবর আলী ও তার স্ত্রী সেলিনা বেগম যেসব এনজিওর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সেগুলো হলোÑ প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র, গ্রামীণ প্রচেষ্টা, ব্র্যাক, রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার (রিক), প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটি, শাপলা গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা, পল্লী মঙ্গল কর্মসূচি (পিএমকে), সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট ইনোভেশন অ্যান্ড প্র্যাকটিসেস (সিদীপ), আশা, গ্রাম উন্নয়ন কর্ম (গাক), ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (ডিএফইডি), ইকো-সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানইজেশন (ইএসডিও) ও ভিলেজ এডুকেশন রিসোর্স সেন্টার (ভার্ক)।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাজশাহীর পবা উপজেলার বামনশিকড় গ্রামে অভাব-অনটন ও ঋণের চাপে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন মিনারুল ইসলাম (৩৫)। ওই দিন সকালে মিনারুলের বাড়ির দুটি কক্ষ থেকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হলেনÑ মিনারুল ইসলাম, তার স্ত্রী মনিরা বেগম (২৮), ছেলে মাহিম (১৪) ও মেয়ে মিথিলা (৩)।