ঢাকা শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫

সব বৈধ ভিসাধারীর  রেকর্ড খতিয়ে  দেখছে যুক্তরাষ্ট্র

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৫, ১২:০৬ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ ভিসাধারী প্রায় ৫ কোটি ৫০ লাখ বিদেশি ব্যক্তির তথ্য নতুন করে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। তাদের মধ্যে কেউ যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করার মতো অভিবাসনের কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করেছে কি না বা ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ঘোষণা দেন, আপাতত বিদেশি ট্রাকচালকদের জন্য কোনো কর্ম-ভিসা দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, বিদেশি চালকেরা ‘মার্কিন নাগরিকদের জীবন বিপন্ন করে তুলেছেন এবং স্থানীয় চালকদের কাজ নষ্ট করছেন।’ বার্তা সংস্থা এপির এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, সব ভিসাধারীর ওপর সব সময় নজর রাখা হয়। যদি দেখা যায়, কেউ ভিসার নিয়ম ভেঙেছে বা ভিসার যোগ্য নন, তাহলে তার ভিসা বাতিল করা হবে। আর তিনি যদি যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন, তবে তাকে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, যেসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে, তার মধ্যে আছেÑ ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান, অপরাধমূলক কর্মকা-, জননিরাপত্তার জন্য হুমকি, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বা সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তা করা।

পররাষ্ট্র দপ্তর আরও বলেছে, তারা আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর রেকর্ড, অভিবাসন নথিপত্র এবং অন্য যেকোনো তথ্যও বিবেচনায় নিয়ে থাকে। এমনকি ভিসা দেওয়ার পর নতুন কোনো তথ্য সামনে এলে সেগুলোও খতিয়ে দেখা হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অভিবাসীদের দমনে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। শুধু অবৈধ নয়, বৈধভাবে থাকা অভিবাসীরাও তার প্রশাসনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

প্রথমে ট্রাম্প প্রশাসন বলেছিল, তারা শুধু বিপজ্জনক অপরাধীদের ধরতে অভিযান চালাবে। কিন্তু এখন প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে আটক করা হচ্ছে। নিউইয়র্ক টাইমসের হিসাবে, এভাবে চলতে থাকলে ২০২৫ সালে প্রায় ৪ লাখ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া হবে। কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই রেস্তোরাঁ, নির্মাণস্থল, খামারে গিয়ে অভিযান চালাচ্ছে। এমনকি অভিবাসন এজেন্টরা নানা আইনি সহায়তার জন্য আদালতে যাওয়া অভিবাসীদেরও আটক করছে।

মার্কিন সরকার মানবিক ভিসা আর অস্থায়ী সুরক্ষা মর্যাদা কমানোর চেষ্টা করছে। আগে এসব সুযোগ কাজে লাগিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে থাকা লাখ লাখ অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস ও কাজ করার অধিকার পেতেন।

বিদেশি শিক্ষার্থী ভিসাধারীরাও বাদ যাচ্ছেন না। চলতি বছরের এই কয় মাসেই ৬ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। সরকারের দাবি, তারা আইন লঙ্ঘন করেছে বা সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করেছে। তবে বাস্তবে দেখা গেছে, শুধু ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বা স্বাধীন মতামত প্রকাশ করার কারণে অনেক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। অথচ মত প্রকাশের স্বাধীনতা যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ এবং এই অধিকার সংবিধানের মাধ্যমে সুরক্ষিত। এমনও হয়েছে, কেউ কোনো আন্দোলনে অংশ নেননি, তবু তাদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে।