ঢাকা শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০২৫

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জাতীয়করণ ‘নতুন বছরে’

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লোগো। ছবি- সংগৃহীত

জাতীয়করণের দাবিতে কঠোর অবস্থানে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। সরকারি আশ্বাস না পাওয়ায় ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আবারও আগামী মাসের শুরুতে মহাসমাবেশ করতে যাচ্ছেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখতে অটল শিক্ষক-কর্মচারীরা। ফলে বর্তমান সরকারের অধীনে জাতীয়করণ করা সম্ভব কি না এ নিয়ে আলোচনা উঠেছে।

তবে সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে দাবি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। কারণ জাতীয়করণ একটি জটিল প্রক্রিয়া। বিশেষ করে আইনগত বিভিন্ন বিষয় রয়েছে। ফলে এগুলো সমাধান করে জাতীয়করণ করা নির্বাচিত সরকার এলে সম্ভব হবে।

সংশ্লিষ্ট অনেকের ধারণা, যেহেতু আগামী বছরের শুরুতে জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সরকার গঠিত হবে। আর শিক্ষক কর্মচারীরাও যেহেতু দাবি বাস্তবায়নে অনড় অবস্থানে থাকার কথা বলছে, সেহেতু নতুন বছরেই জাতীয়করণ প্রক্রিয়ায় গতি আসতে পারে।

জাতীয়করণের দাবি নতুন নয়। ২০১৮ সালে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণসহ বেশকিছু দাবিতে শুরু হয়েছিল আন্দোলন। কিন্তু চাপের মুখে তৎকালীন সরকার ৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ও ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতা বাড়ায়। পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের আশ্বাসও দিয়েছিল সরকার। কিন্তু সেই দাবি আর পূরণ হয়নি।

তবে ওই সরকারের পতন হলে জাতীয়করণের দাবি আরও জোড়ালো হয়। জাতীয়করণের দাবিতে বিক্ষোভে নামেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। বিশেষ করে গত ১৩ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বড় সমাবেশ করেন তারা। যেখানে সারা দেশ থেকে কয়েক সহস্রাধিক শিক্ষক-কর্মচারী উপস্থিত হয়েছিলেন। ওইদিন সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারের সঙ্গেও দাবি দাওয়া নিয়ে বৈঠকে বসেন তারা।

কিন্তু কাঙ্খিত আশ্বাস পায়নি। জাতীয়করণের বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার জানিয়েছিলেন, ‘জাতীয়করণ একটি কঠিন বিষয়। জাতীয়করণ নির্বাচিত সরকার করবে।’

তবে শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছিল সরকার। সে অনুযায়ী, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা ৫০ শতাংশ বৃদ্ধির দাবি থাকলেও ২০ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার। কিন্তু এতে সন্তোষ্ট নন শিক্ষক-কর্মচারীরা।

পরে জাতীয়করণের দাবিতে ৩০ দিনের আল্টিমেটামসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতির হুমকি দেওয়া হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চাকরি জাতীয়করণসহ চার দাবি নিয়ে আগামী ৭ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ করবেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ও বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এই কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।

একাধিক শিক্ষক নেতা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, তারা তাদের দাবির পক্ষে অনড়। দাবি বাস্তবায়নে আগামী আরও কঠোর আন্দোলন দেবেন। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।

এ বিষয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাতীয়করণের দাবি বাস্তবায়ন এখনই সম্ভব নয়।

একজন কর্মকর্তা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘এখন সম্ভব না হলেও নতুন সরকার গঠিত হলে দ্রুততর সময়ে জাতীয়করণ প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।’