বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনি কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন কমিশন।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ ঘোষণা দেন সহকারী নির্বাচন কমিশনার ড. মোহসীনা আহসান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. শাহজামান, অধ্যাপক মো. আমির শরীফ, সহযোগী অধ্যাপক মো. মাসুদ রানা, সহযোগী অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার সরকার এবং সহযোগী অধ্যাপক মো. হাসান আলী।
ড. মোহসীনা আহসান বলেন, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৭ নভেম্বর মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও হলভিত্তিক শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রাপ্তিতে জটিলতার কারণে তা এক কার্যদিবস পিছিয়ে ৩০ নভেম্বর থেকে শুরু হয় এবং ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ কার্যক্রম চলছিল।
তিনি বলেন, তফসিল কার্যকর করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে হলভিত্তিক সঠিক, হালনাগাদ ও ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকা পাওয়া অপরিহার্য। কে কোন হলের শিক্ষার্থী, কার ভর্তিচ্যুতি হয়েছে, কার ছাত্রত্ব কোন কারণে বাতিল হয়েছে এসব নির্ভুল তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই সরবরাহ করতে হবে। এসব তথ্যের ক্ষেত্রে কমিশনের নিজস্ব সিদ্ধান্ত দেওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে প্রেরিত ভোটার তালিকা ও হল সংযুক্তির নথিপত্রে একাধিক গুরুতর অসংগতি, ভুল তথ্য ও অসম্পূর্ণতা পাওয়া গেছে। ভুল ও অসংগতিপূর্ণ তালিকার ভিত্তিতে মনোনয়নপত্র বিতরণ অব্যাহত রাখলে নির্বাচনের ন্যায়সংগততা, স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা বিঘ্নিত হবে।
নির্বাচন কমিশন মনে করছে, ভুল তালিকা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে এবং মনোনয়নপত্র বিতরণে বৈধতা-সংক্রান্ত জটিলতা সৃষ্টি করবে। তাই ত্রুটিপূর্ণ তালিকা সংশোধন ছাড়া নির্বাচন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। একই সঙ্গে যেসব দপ্তর থেকে ভুল তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে সেখানে কোনো ব্যক্তি উদ্দেশ্যমূলকভাবে কমিশনকে হেয় করার চেষ্টা করেছে কি না তা তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
কমিশন জানায়, হলভিত্তিক ভোটার তালিকার অসংগতি দূর না হওয়া পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণসহ তফসিলের অন্যান্য কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। রেজিস্ট্রার অফিসকে জরুরি ভিত্তিতে সব ভুল, বাদ পড়া, দ্বৈততা ও অসামঞ্জস্য সংশোধন করে যাচাইকৃত তালিকা দ্রুত নির্বাচন কমিশনের নিকট সরবরাহ করতে বলা হয়েছে, যেন বিলম্ব ছাড়াই নির্বাচন কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা যায়।
নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে জানায়, সঠিক তথ্য ও নথিপত্র না পাওয়া পর্যন্ত কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করে ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবে না।
এর আগে সোমবার শিক্ষার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। মনোনয়ন সংগ্রহ শুরু হয় গতকাল রোববার, যা আজ সোমবার শেষ হওয়ার কথা ছিল।
