যারা একটু অলস কিংবা সময়ের অভাবে প্রতিদিন গোসল করতে পারছেন না, তাদের জন্য সুখবর। কারণ, বাজারে আসছে স্বয়ংক্রিয় গোসলের একটি যন্ত্র। হিউম্যান ওয়াশিং মেশিন তথা ‘হিউম্যান ওয়াশার ফর ফিউচার’ নামে এ যন্ত্র প্রদর্শিত হয়েছে জাপানের ওসাকায় অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড এক্সপোতে। গত এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চলে এ প্রদর্শনী। সেখানে পরীক্ষামূলকভাবে যন্ত্রটি প্রদর্শিত হয়। সেখানে ব্যাপক সাড়া ফেলার পর এবার এটি বিক্রির জন্য বাজারে আনা হয়েছে।
জাপানি সংস্থা সায়েন্স এই মানুষ ধোয়ার ওয়াশিং মেশিনটি তৈরি করেছে। মেশিনের ভিতরে থাকা ক্যাপসুলে ঢুকে উপরে ঢাকনা আটকে দিলেই শুরু হবে মানুষের ধোলাই! তবে সাধারণ ওয়াশিং মেশিনে জামা-কাপড়ের মতো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ধোয়াধুয়ি হবে না। তার বদলে ধোয়ার মতো বিন্দু বিন্দু জলকণা দিয়ে গোটা শরীরের সঙ্গে মানুষের অন্তরাত্মাকেও এই যন্ত্র পরিষ্কার এবং সতেজ করে দেবে বলে দাবি করেছেন সংস্থাটির মুখপাত্র।
৭০-এর দশকে প্রথমবার এই ওয়ার্ল্ড এক্সপোতেই এ ধরনের একটি যন্ত্র প্রদর্শন করা হয়েছিল। তা দেখেই ভবিষ্যতে মানুষ ধোয়া তথা গোসলের এমন অত্যাধুনিক যন্ত্র তৈরির স্বপ্ন দেখেছিলেন সায়েন্স সংস্থার বর্তমান প্রেসিডেন্ট। সেই সময় তিনি একজন কিশোর ছিলেন।
নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সায়েন্সের মুখপাত্র সাচিকো মায়েকুরা জানিয়েছেন, মানুষের শরীর ধোয়ার সময় এই যন্ত্রের ভিতরে মৃদু স্বরে বাজনাও বাজবে। ফলে শরীরে সঙ্গে মনও সতেজ, শান্ত হবে।
কীভাবে কাজ করবে মানুষ ধোয়ার এই ওয়াশিং মেশিন? সাচিকো জানান, মেশিনে ঢুকে ভিতরে থাকা প্রায় আড়াই মিটার লম্বা পডে শরীর এলিয়ে দিয়ে ঢাকনা বন্ধ করতে হবে। এরপর ধোয়ার মতো বিন্দু বিন্দু জলকণা এবং মাইক্রবাবল শরীর ধোয়ার কাজ শুরু করবে। গোটা প্রক্রিয়ার সময় হৃদস্পন্দনসহ শরীরের বিভিন্ন মানদ-গুলো স্বাভাবিক আছে কি না, তার ওপরও নজর রাখবে এই যন্ত্রে থাকা সেন্সর। শরীর ধোয়ার সময় যন্ত্রের ভিতরে হাল্কা বাজনা বাজবে, সঙ্গে মনকে শান্ত করে এমন ছবিও দেখতে পাবেন ব্যবহারকারী। ধোয়াধুয়ির পর জামাকাপড়ের মতোই শরীরকেও শুকিয়ে দেবে এই যন্ত্র। থাকবে না স্নানের পর গা মোছামুছির ঝামেলাও।
জাপান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আপাতত ৫০টি যন্ত্র তৈরি করবে জাপানের এই সংস্থাটি। দাম পড়বে তিন লাখ ৮৫ হাজার ডলার বা ছয় কোটি ইয়েনের মতো।
মার্কিন এক রিসোর্ট কোম্পানি হিউম্যান ওয়াশিং মেশিনটি কেনার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করলে বাণিজ্যিকভাবে এটি উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেয় সায়েন্স। প্রথম হিউম্যান ওয়াশিং মেশিন কিনেছে ওসাকার একটি হোটেল কর্তৃপক্ষ। সেখানকার একজন মুখপাত্র বলেছেন, তারা হোটেলে আসা অতিথিদের এ যন্ত্র দিয়ে সেবা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। অন্য গ্রাহকদের মধ্যে রয়েছে জাপানের ইলেকট্রনিক পণ্যের প্রতিষ্ঠান ইয়ামাদা ডেনকি। তারা আশা করছে, এ যন্ত্র মানুষকে তাদের আউটলেটের প্রতি আকৃষ্ট করবে।

