ঢাকা শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫

মোটরবাইকে হলার-হাইড্রোলিক হর্নে অতিষ্ঠ রাজধানীবাসী

স্বপ্না চক্রবর্তী
প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৫, ১২:০৫ এএম

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সবার সহায়তা প্রয়োজন। আমরা শুধু বক্তৃতা নয়, বাস্তব কাজ শুরু করতে চাই। কনসার্ট, অ্যাম্বুলেন্স ও পরিবহন খাতে নিয়ন্ত্রিত শব্দ ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। বিশেষ করে হাইড্রোলিক হর্ন একেবারেই বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছেÑ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা

আগস্টের ২০ তারিখ, বুধবার রাত সাড়ে ৯টা। হাতিরঝিল মহানগর ব্রিজে এক মধ্যবয়স্ক ব্যক্তিকে মারধর করছেন কয়েকজন যুবক। তাকে বাঁচাতে আনসারের দুই সদস্য এগিয়ে গেলেÑ তারাও মারধরের শিকার হন। কাছে গিয়ে জানা গেলÑ ওই যুবকরা মোটরসাইকেলে উচ্চ শব্দের হলার কেন ব্যবহার করছে পথ আটকিয়ে এ কথা জানতে চান ওই ব্যক্তি। এ কারণে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে তারা মারধর করেন ওই ব্যক্তিকে। লাঞ্ছিত হন তার সঙ্গে থাকা স্ত্রীও। 

একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর মোটরসাইকেল বা মোটরযান চালানোর লাইসেন্স পাওয়ার কথা থাকলেও রাজধানীর চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। অলিগলিতে ১৪ থেকে ১৭ বছরের কিশোর মোটরসাইকেল নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অহরহ। শুধু মোটরসাইকেল চালানোই নয়, উচ্চ শব্দের হলার (একজস্ট/সাইলেন্সার) লাগিয়ে তৈরি করছে মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণ। সঙ্গে বেড়েছে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহারের প্রবণতা। বিশেষ করে হাতিরঝিল, গুলশান, বারিধারা, উত্তরা, খিলগাঁওয়ের বিভিন্ন আবাসিক এলাকার সড়কগুলোয় উচ্চ শব্দের হলার লাগিয়ে এসব আরোহীরা নগরবাসীর মধ্যে তৈরি করছে আতঙ্ক। মূল সড়কে নিয়ম ভেঙে মোটরসাইকেল চালালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা ধরনের শাস্তি জরিমানা করলেও আবাসিক এলাকায় দাপিয়ে বেড়ানো এসব চালকদের যেন দেখার কেউ নেই। 

রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, এসব মোটরসাইকেলচালকদের প্রায় সবাই নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী। আগে নগরীতে এমন মডিফাইড মোটরবাইকের সংখ্যা হাতেগোনা থাকলেও এখন সেই সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ২ থেকে ৬ লাখ টাকা দামের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোটরবাইককে পরিণত করা হচ্ছে এমন অস্বস্তিকর যানবাহনে। যার বেপরোয়া চলাচলে সৃষ্ট উচ্চ শব্দে অতিষ্ঠ নগরীর পথচারীসহ অন্যান্য যান চালকরা। শুধু নিজেকে অন্যের থেকে আলাদা আর শখের বশে দামি মোটরবাইকটির ক্ষতি করে এমন উচ্চ শব্দের বাইকে রূপান্তর করার কথা স্বীকার করেছেন একাধিক কিশোর।

এ জন্য তারা মোটা অঙ্কের টাকাও খরচ করছে। এসব যানবাহনের শব্দদূষণে শিশু থেকে বৃদ্ধ বয়সের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ট্রাফিক আইন অনুযায়ী এটি দ-নীয় অপরাধ। তাই তাদের নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন প্রয়োগের দাবি সচেতন মহলের। 

গত বছরও রাজধানীর উত্তরায় হাইড্রোলিক হর্নের মাত্রাতিরিক্ত শব্দে বিরক্ত হয়ে দুই পথচারী প্রতিবাদ করলে তাদের প্রকাশ্যে কোপায় কয়েকজন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। এরপর এসব হর্নের বিরুদ্ধে সোচ্চার সাধারণ মানুষের অবস্থান হলেও এখনো পরিস্থিতি একই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে মাঝেমধ্যে প্রতিবাদ করলেও বাস্তবে লবডঙ্কা। 

গত বুধবার নগরীর বাংলামোটর এলাকা থেকে ইয়ামাহা এমটি ব্র্যান্ডের একটি মোটরবাইকে হলার লাগিয়ে যেতে দেখা যায় এক কিশোরকে। সে নিজেকে নগরীর একটি কলেজের এইচএসসি প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানায়। সিফাত নামের ওই কিশোর বলেন, এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল করায় তাকে পরিবার থেকে বাইকটি দেওয়া হয়েছে। নিজের বাইকটিকে স্বতন্ত্র বানাতে মূলত হলারটি লাগিয়েছে ৮ হাজার টাকা খরচ করে। ঢাকায় তার বন্ধুদের দেখে এই মডিফাই করেছে। এমন হলারের মূল্য ৫০ হাজার টাকার ওপরেও রয়েছে। বর্তমানে এটি স্টাইল ও ট্রেন্ড। নগরীর প্রায় সব মোটর মেকানিক এ মোডিফাই করতে পারে। সে হলার লাগিয়েছে তবে অনেকেই উচ্চ শব্দের মোডিফিকেশনের জন্য নিজেদের বাইকের সাইলেন্সার পাইপটি কেটেও ফেলে। সিফাত জানায়, সে যখন বাইক নিয়ে যায় অনেক সময় পথচারীরা গালাগাল করে। তবে এতে তার কিছু যায় আসে না বলে দাবি তার।

দৈনিক অন্তত ১০ জন কিশোর হাইড্রোলিক হর্ন লাগাতে দোকানে আসেন জানিয়ে বাংলামোটরের ট্রাস্ট বাইক সেন্টারের মেকানিক নয়ন মাঝি বলেন, ‘আমাদের তো এটা ব্যবসা। কেউ এসব হর্ন লাগাতে এলে আমরা লাগিয়ে দেই। কিন্তু এটি মানুষের বিরক্তির কারণ হতে পারে এটি বলে দেই। আমাদের তো এটা ব্যবসা। কাস্টমার যা চাইবে তাই দেব আমরা।’ 

সন্ধ্যার পর থেকে হর্নের কারণে বাসায় থাকা দায় উল্লেখ করে রাজধানীর মহানগর এলাকার বাসিন্দা রনি আহমেদ বলেন, ‘মহানগর এলাকায় হাতিরঝিলের লাগোয়া আমার বাসা। সন্ধ্যার পর থেকেই শুরু হয় এসব হাইড্রোলিক হর্নওয়ালা বাইকারদের অত্যাচার। আমার ৩ বছর বয়সি শিশুবাচ্চাটা ভয়ে কান্না করে উঠে। কাকে এটি নিয়ে অভিযোগ করব কী অভিযোগ করব কিছুই বুঝতে পারি না। 

একই অভিযোগ করেন মধুবাগ এলাকার বাসিন্দা খালেদা আক্তার। তিনি জানান, এসব হাইড্রোলিক হর্নের কারণে কদিন থেকেই কানের সমস্যায় ভুগছেন। বাম কানে হর্নের কোনো শব্দ শুনতে পারছেন না। গিয়েছিলেন তেজগাঁয়ের জাতীয় নাক, কান, গলা ইনস্টিটিউটে ডাক্তার দেখাতে। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার চিকিৎসক জানিয়েছেন প্রতিদিন মাত্রাতিরিক্ত শব্দগ্রহণের কারণে কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল তবে আপাতত হেয়ারিং এইড মেশিন ব্যবহার করলে শুনতে পারবেন। তারপর থেকে মেশিনই ব্যবহার করছেন তিনি।

তিন বছর বয়সি শিশু মেয়েকে নিয়ে নাক, কান, গলার চিকিৎসকের চেম্বারে দেখাতে এসেছেন শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী। কী হয়েছে জানতে চাইলে বলেন, মূল সড়কের পাশেই বাড়ি। তাই সারাক্ষণই গাড়ির হর্ন, মানুষের চিৎকার চেচামেচিতে বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়লেও উপায়ন্তর না দেখে ওখানেই বসবাস করছিলেন। কিন্তু বিপত্তি বাধে সন্তানের জন্মের পর থেকে। জন্মের তিন মাসের মাথায় বুঝতে পারেন কোনো শব্দে সে সাড়া দিচ্ছে না। এরপর থেকেই শুরু হয়েছে মেয়েকে সুস্থ করার যুদ্ধ। এই ডাক্তার, ওই ডাক্তার হয়ে কবিরাজের কাছে পর্যন্ত গিয়েছেন মেয়ের শ্রবণশক্তি ফেরাতে। কিন্তু সবারই এক কথা গর্ভকালীন উচ্চ মাত্রায় শব্দদূষণের কবলে পড়েছিল শিশুটি। তার শ্রবণশক্তি ফিরতেও পারে নাও ফিরতে পারে। 

বিশেজ্ঞরা বলছেন, সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি শব্দদূষণের ফলে রাজধানী ঢাকা এখন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ দূষণের প্রধান উৎস বিভিন্ন যানবাহনের শব্দ ও হাইড্রলিক হর্ন, যা শিশু, বয়স্ক, অসুস্থ ব্যক্তিসহ বসবাসযোগ্য নগরী ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। অতিসত্বর এসব যানবাহনের শব্দদূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ভবিষ্যতে একটি বধির প্রজন্ম বেড়ে উঠার আশঙ্কা রয়েছে। 

শব্দদূষণ বিষয়ে নাক, কান, গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আবির্ভাব নাহা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, শব্দদূষণ এবং এর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ শ্রবণ পরিবেশ তৈরির জন্য বিধি বলবৎ করতে পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে প্রচারণা চালাতে হবে। শব্দদূষণ প্রতিরোধে কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরে তিনি বলেন, শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিগুলো যথাযথভাবে কার্যকর করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারি সংস্থাগুলোর এখতিয়ার নির্ধারণ করা এবং সারা দেশে শ্রবণসহায়ক যন্ত্র এবং ইশারা ভাষা শিক্ষণ সহজলভ্য করা।

একজন মানুষ যদি টানা ৮ ঘণ্টা ৯০ থেকে ১০০ ডেসিবেল শব্দ প্রতিদিন শোনে তাহলে ২৫ বছরের মধ্যে শতকরা ৫০ জনের বধির হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, শব্দদূষণ চোখ ও মাথার বিভিন্ন সমস্যার জন্য দায়ী। শহরের বেশির ভাগ মানুষই মাথার যন্ত্রণায় ভোগে, যার অন্যতম কারণ শব্দদূষণ। এ ছাড়া ক্রমাগত শব্দদূষণের ফলে মানুষ হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, গ্যাস্ট্রিক এমনকি লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হতে পারে। ঢাকা শহরে যেভাবে শব্দদূষণ বেড়ে চলেছে, তাতে এ শহরের অর্ধেক মানুষের শ্রবণক্ষমতা ৩০ ডেসিবেল পর্যন্ত কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

এদিকে ‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা’ জরুরি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে কাজ করার আহ্বান সাধারণ মানুষের। একটি বেসরকারি কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক শহীদুল ইসলাম বলেন, রাস্তায় বের হলে শব্দদূষণে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠে। মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণহীন গতিবেগ ও শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়াসহ উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকারী জেনারেটর, হর্ন, যন্ত্রপাতি আমদানি ও ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। বেতার, টেলিভিশন ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে জনগণকে শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। আবাসিক এলাকার শেষ সীমানা থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যে নির্মাণকাজের জন্য ইট বা পাথর ভাঙার মেশিন ব্যবহার না করা। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক বা অন্য কোনো ধরনের সভা সমাবেশের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সাউন্ড সিস্টেম যেন শব্দের মাত্রা অতিক্রম না করে সে ব্যবস্থা করতে হবে। 

শব্দদূষণকে নীরব ঘাতক আখ্যায়িত করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, সড়কে হর্ন বাজানোর তীব্র প্রতিযোগিতা চলছেই। মানুষের সহন ক্ষমতার দুই থেকে তিনগুণ শব্দের উৎপত্তি হচ্ছে এখানে। ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও চলতে হচ্ছে অতিরিক্ত শব্দদূষণের মধ্য দিয়ে। ফলে, নানা রকম শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভুগছে নগরবাসী। এটি বন্ধে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। এখনই শব্দের উচ্চ মাত্রা কমানো না গেলে এই নীরব ঘাতক স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ানোর পাশাপাশি কর্মক্ষম মানুষকেও ধীরে ধীরে বার্ধক্যে পরিণত করবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, শব্দের স্বাভাবিক মাত্রা ০-২০ ডেসিবেল, মৃদু মাত্রা ২১-৪০ ডেসিবেল, মাঝারি/সহনীয় মাত্রা ৪১-৭০ ডেসিবেল, তীব্র মাত্রা ৭১-৯০ ডেসিবেল, অসহনীয় মাত্রা ৯১-১২০ ডেসিবেল।

সম্প্রতি পরিবেশ অধিদপ্তরের ‘শব্দদূষণ’ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারত্বমূলক কর্মসূচির এক জরিপে দেখা গেছে, রাজধানীতে শব্দদূষণ নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে ১৩-৪০ ডেসিবেল বেশি। সবচেয়ে নীরব এলাকায় ৫০ আর শিল্প এলাকায় সর্বোচ্চ ৭৫ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ থাকার কথা। অথচ পল্টন, ফার্মগেট, শ্যামলী, মগবাজার, গাবতলী, মিরপুর, মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডসহ ৭০টি এলাকাতেই শব্দের মাত্রা ১২০ থেকে ১৩০ ডেসিবেলের বেশি। ফলে, মাথা ধরা, শারীরিক অবসাদ, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, শ্রবণ শক্তি হ্রাসসহ ৩০টির অধিক কঠিন রোগের সৃষ্টি হয়।

বর্তমানে পরিবেশদূষণ রোধের বিষয়টি দেশে নানাভাবে আলোচিত হচ্ছে। অনেক ব্যক্তি বেসরকারি সংগঠন পরিবেশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি তথা পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করছে। প্রচার মাধ্যমগুলো এ ব্যাপারে কাজ করছে। কিন্তু শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নেই কার্যকর কোনো উদ্যোগ। কয়েকটি বিশেষ এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হলেও উচ্চমাত্রার শব্দদূষণযুক্ত এলাকাগুলোয় দূষণ নিয়ন্ত্রণে নেই কার্যকর কোনো উদ্যোগ। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে দেশে তেমন কোনো আইনও নেই। ট্রাফিক আইনও যথাযথভাবে পালিত হচ্ছে না। ‘হর্নমুক্ত সড়ক’ ঘোষণার উদ্যোগ যেমন ২০১৭ সালে ধানমন্ডি ও বনানী এলাকায় পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছিল, তা আর বাস্তবায়িত হয়নি।

কারো একার চেষ্টায় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। রূপালী বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সবার সহায়তা প্রয়োজন। উন্নত দেশগুলোয় সরকার ও জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগে শব্দদূষণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বাংলাদেশেও আমরা এ ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে চাই। আমরা শুধু বক্তৃতা নয়, বাস্তব কাজ শুরু করতে চাই। কনসার্ট, অ্যাম্বুলেন্স ও পরিবহন খাতে নিয়ন্ত্রিত শব্দ ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। বিশেষ করে হাইড্রোলিক হর্ন একেবারেই বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।