নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় প্রেমের সম্পর্কের জেরে বাবা-ছেলেকে (প্রেমিক) মারধর ও কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে মেয়ের বাবা ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। গত রোববার রাত ১১টার দিকে উপজেলার তেঘরপাড়া মাঝদিঘা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গত সোমবার রাতে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত মেয়ের বাবা ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে নলডাঙ্গা থানায় মামলা করা হয়েছে। নলডাঙ্গা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আহতরা হলেন ওই এলাকার শফিকুল ইসলাম (৫৫) ও তার ছেলে রাকিব (২২)। তারা বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিযুক্ত মেয়ের বাবা একই এলাকার বাসিন্দা নুর হোসেন। তিনি মির্জাপুর দিয়ার ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী রাকিবের সঙ্গে নুর হোসেনের মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। এরই একপর্যায়ে গত রোববার রাতে নুর হোসেন ও তার লোকজন রাকিবকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করা হয়। বিষয়টি মোবাইলে শফিকুল ইসলামকে জানালে তিনি ছেলেকে বাঁচাতে ঘটনাস্থলে যান। শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাকেও মারধর ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতাল পাঠান। সেখানে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ওই দিন রাতেই রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় গত সোমবার রাতে আহতের পরিবারের পক্ষ থেকে নলডাঙ্গা থানায় মামলা করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপি নেতা নুর হোসেনের নেতৃত্বে তার ছেলে কৌশিক, ভাতিজা সৈকত, নাতি শিপনসহ বেশ কয়েকজন প্রথমে রাকিবকে ধরে এনে মারপিট করে। পরে শফিকুল ইসলাম এলে তাকেও মারপিট ও কুপিয়ে জখম করা হয়। একপর্যায়ে রাকিব ও তার বাবা ঘটনাস্থলে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে প্রতিপক্ষ তার বাসা থেকে মেয়েকে অপহরণ করতে এসেছে বলে থানা পুলিশকে ফোন করে জানায়। এ ঘটনার পর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আহত শফিকুলের ছোট ভাই মহিদুল ইসলাম জানান, নুর হোসেনের মেয়ের সঙ্গে আমার ভাতিজার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মেয়েপক্ষ সেই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি। এ নিয়ে উভয় পক্ষ আর কোনো সম্পর্কে জড়াবে না বলে সম্মত হয়। এরপরেও কেন এ হামলা করা হলো? বর্তমানে আহত বাবা-ছেলের অবস্থা সংকটাপন্ন। প্রশাসনের কাছে এর সঠিক বিচার চাই।
অভিযুক্ত নুর হোসেন জানান, ‘রাকিব আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করত। একাধিকবার নিষেধ করা সত্ত্বেও সে কথা শুনেনি। রোববার রাতে রাকিব ও তার বাবা দলবল নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে আমার মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। বিষয়টি আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। মারপিটের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
নলডাঙ্গা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় সোমবার রাতে আহত রাকিবের বড় ভাই রনি অভিযুক্ত মেয়ের বাবাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।