ঢাকা মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

পুতুলসহ ৩৫ জনের  নামে দুদকের মামলা

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ০৮:৪১ এএম
দুদকে
  • সূচনা ফাউন্ডেশনের ৪৪৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ

সূচনা ফাউন্ডেশন নামের ভুয়া প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দানের নামে ঘুষ আদায় ও ৪৪৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৩৫ জনের নামে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন মামলা অনুমোদনের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সূচনা ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। গত বছরের ২৪ নভেম্বর সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশনা দেয় আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। আর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফাউন্ডেশনের আয়কর অব্যাহতি সুবিধা বাতিল করে এনবিআর। চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি সূচনা ফাউন্ডেশনে অভিযান চালায় দুদক। সে সময় প্রতিষ্ঠানটিকে অস্তিত্বহীন বলে জানায় দুদক। গত ২০ মার্চ ফাউন্ডেশনের নামে ৩৩ কোটি আত্মসাতের অভিযোগে পুতুলসহ ২ জনের নামে মামলা করে দুদক।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়, পুতুলসহ অন্য আসামিরা সূচনা ফাউন্ডেশন নামে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান গঠন করে এনজিওবিষয়ক ব্যুরো ও সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে রেজিস্ট্রেশন নেন। এরপর বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ সুবিধা প্রদান করে তাদের কাছ থেকে

ডোনেশনের নামে ঘুষ আদায় করে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ব্যয় না করে ৪৪৮ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন।

সূচনা ফাউন্ডেশনের ১০ আসামি:

ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি সায়মা ও হোসেন ওরফে সায়মা ওয়াজেদ, প্রফেসর ডা. মাজহারুল মান্নান, সাবেক বিসিবি সভাপতি ও সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন, সায়ফুল্লাহ আব্দুল্লা সোলেনখী ও জ্যান বারী রিজভী, ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান প্রাণ গোপাল দত্ত, এক্সিকিউটিভ কমিটি সদস্য এম এস মেহরাজ জাহান, প্রফেসর রুহুল হক, শিরিন জামান মুনির, এম এস মেহরাজ জাহান ও ডা. হেলালউদ্দিন আহমেদ।

ব্যবসায়ী ৮ আসামি:

দুদক মহাপরিচালক বলেন, ব্যবসায়ীরা ওই ফাউন্ডেশনে অনুদান দিয়ে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন। আসামিরা হলেন- হামিদ রিয়েল এস্টেটের চেয়ারম্যান ইন্তেকাবুল হামিদ, সাবেক মন্ত্রী ও ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বিএসসি, সাবেক এমপি ও বেক্সিমকোর ভাইস চেয়ারম্যান সালমান ফজলুর রহমান ওরফে সালমান এফ রহমান, সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আজিজ খান, সাবেক এমপি ও ব্যবসায়ী এ কে এম রহমাতুল্লাহ, ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান মঈন উদ্দীন হাসান রশিদ, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, বিল ট্রেড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনায়েতুর রহমান।

এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যানসহ আসামি ১৬ জন: দুদকের অভিযোগে বলা হয়, এনবিআরের কর্মকর্তারা ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে সূচনা ফাউন্ডেশনকে কর ছাড় দিয়েছেন। ফলে প্রায় শতকোটি টাকার কর ফাঁকি ও আত্মসাৎ হয়েছে।

এনবিআরের আসামিরা হলেনÑ সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, সদস্য মীর মুস্তাক আলী, সাবেক সদস্য চৌধুরী আমির হোসেন, সদস্য পারভেজ ইকবাল, সদস্য ফরিদ উদ্দিন, সদস্য ফিরোজ শাহ আলম, সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, ড. মাহবুবুর রহমান, সদস্য মো. লোকমান চৌধুরী, সাবেক সদস্য রেজাউল হাসান, সাবেক সদস্য জিয়া উদ্দিন মাহমুদ, সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, সদস্য এ এফ এম শাহরিয়ার মোল্লা ওরফে আবু ফয়সাল মো. শাহরিয়ার মোল্লা, সাবেক সদস্য সুলতান মো. ইকবাল, সদস্য তন্দ্রা সিকদার ও সাবেক সদস্য কালীপদ হালদার। 

হাসিনাকন্যা পুতুল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ছিলেন। গত ১২ জুলাই পুতুলকে ছুটিতে পাঠায় সংস্থাটি। বিভিন্ন অভিযোগে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে দুদক।