ঢাকা মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

আইসিইউ থেকে  কেবিনে নুর

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ০৯:০২ এএম
নুরুল হক নুর

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাকে আইসিইউ থেকে কেবিনে নেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ থেকে নুরকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে নুরুল হক নুরকে তিন দিন আইসিইউতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। নুরকে দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা করানোর দাবি জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। 

ঢামেকের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, নুরের নাক ও চোয়ালের হাড় পুরোপুরি সুস্থ হতে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ সময় লাগবে। চোখের মধ্যে জমে থাকা রক্ত ঠিক হতে ১ থেকে ২ সপ্তাহের প্রয়োজন হবে। পরিচালক আরও জানান, নরমাল খাবার খাচ্ছেন নুর, তবে খাওয়ার সময় ব্যথা অনুভব করছেন। আঘাতের পর নাক থেকে রক্তক্ষরণের কিছু অংশ শ্বাসনালিতে চলে গিয়েছিল; গতকাল কাশির সঙ্গে সেই রক্ত দুইবার বের হয়েছে। তবে এতে কোনো ঝুঁকি নেই। চিকিৎসকরা জানান, এসব কারণ বিবেচনা করে নুরকে আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হবে এবং তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে আবু হানিফ আরও বলেন, নুরুল হক নুরের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো আশঙ্কামুক্ত নয়, বরং উন্নত চিকিৎসা না হলে সামনে বড় ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। মাথা ও মুখে মারাত্মক আঘাতের পরও বয়সের কারণে বডি সাময়িক স্থিতিশীল হলেও ভবিষ্যতে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। সাধারণত এসব ঘটনার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব থাকে। আঘাতের পর ব্রেনে এ অসুখের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ে থাকে; নানা রকম স্নায়বিক অসুবিধা ছাড়াও কথা বলতে এবং ভারসাম্য ঠিক রাখতে সমস্যা, মনে রাখার সমস্যা এ ধরনের নানা সমস্যা হতে পারে। যেহেতু মাথায় ফ্র্যাকচার আছে তাতে করে ইনফেকশন হওয়াটাও অবাস্তব নয়। তাই এসব চিকিৎসার জন্য উন্নত চিকিৎসার পাশাপাশি ক্লোজ অবজারভেশন এবং ফারদার ফলোআপ জরুরি। 

নুরের স্বাস্থ্য ইস্যুতে রাশেদ বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সেনাবাহিনীর কতিপয় সদস্যদের বিচার করতে হবে। এ ইস্যুতে নির্বাচন বানচাল করার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, নুরকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও আশ্বস্ত করেছেন। এদিকে আহত নুরের স্ত্রী মারিয়া আক্তার বলেন, এখনো আশঙ্কামুক্ত নন নুর। হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করে তিনি নুরের সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করেন।

এদিকে, চীন সফর শেষে দেশে ফিরেই গণঅধিকার পরিষদের সভাপতির স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, সার্জিস আলমসহ দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। গত রোববার রাতে ঢামেকে চিকিৎসাধীন নুরের খোঁজ নিতে যান এনসিপি নেতারা। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি হাসপাতালে পৌঁছান তারা। এনসিপি নেতারা নুরের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন এবং হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ সময় এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিবসহ আরও কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের একটি মিছিল যাওয়ার সময় সংঘর্ষে জড়ান দুই দলের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার পর সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করলে গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দলটির নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ করেন। তখন দলের সভাপতি নুরুল হক নুর গুরুতর আহত হন।