নেত্রকোনায় পূর্ববিরোধের জেরে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে জাহাঙ্গীর আলম (২০) নামে এক তরুণকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের চল্লিশাকান্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জাহাঙ্গীর আলম ওই এলাকার আলী উসমানের ছেলে। নেত্রকোনা সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি এবং এলাকায় বালু শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলমের বড় ভাই আলমগীর মুদি দোকানদার। একই এলাকার রনি মিয়া (২০) ও অরঙ্গরাজ এলাকার তরিকুল ইসলাম (২১) আলমগীরের কাছ থেকে প্রায় ৪ হাজার টাকা ধার নেন। পাওনা টাকা চাইলে ওই দুই তরুণ সময়ক্ষেপণ করেন। কয়েক দিন আগে শহরের কুড়পাড় এলাকায় রনি আহমেদ নামে এক যুবক ওই দুজনকে পাওনা টাকা পরিশোধ করতে সময় বেঁধে দেন; কিন্তু বৃহস্পতিবার আলমগীর ও তার ভাই জাহাঙ্গীর ওই দুই যুবককে একত্রে পেয়ে তাদের কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায় করেন। পরে ওই দুই যুবক মধ্যস্থতাকারী রনি আহমেদের কাছে নালিশ করেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে লোকজন নিয়ে জাহাঙ্গীরের বাড়ির সামনে হাজির হন রনি। পরে জাহাঙ্গীরকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে হকিস্টিক, রড ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর অচেতন হয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
জাহাঙ্গীরের বাবা উসমান আলী বলেন, আলমগীর হোসেন রাকিবের পাওনা চার হাজার টাকার তাগাদা দেয়। এ কারণে আমার ছেলেকে তিন দিন আগে মারধর করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় ছোট ছেলে জাহাঙ্গীর ফেরাতে গেলে তাকেও বেধড়ক মারধর করে। এ ঘটনার জেরে আবারও শুক্রবার রাতে আমার ছেলে জাহাঙ্গীরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে রনি মিয়া, লিখন মিয়া, রাসেল মিয়া, ফারুক মিয়াসহ কয়েকজন তাকে মারধর করে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায়। আমরা খবর পেয়ে ময়মনসিংহ নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শনিবার দুপুরে সে মারা যায়। হামলাকারীরা আমাকেও মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
জাহাঙ্গীরের মা আম্বিয়া খাতুন বলেন, ৩ দিন আগে আমার বাড়িতে এসে ছেলেরে পিটাইছে। আমি বিচার পাই নাই। আবার কাল রাতে আমার ছেলেরে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।
নেত্রকোনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজল কুমার সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা যায়নি। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন