বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে রাজধানীর রামপুরায় ছাদের কার্নিশে ঝুলে থাকা আমির হোসেনকে গুলি করাসহ দুজনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে প্রসিকিউশন পক্ষের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য আগামী ১৬ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনাল ১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম। সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) চঞ্চল চন্দ্র সরকারের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সারওয়ার জাহান। তিনি অভিযোগ পড়ে শোনান। এরপর নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন আসামি চঞ্চল। শুনানি শেষে অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে ৭ আগস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ প্রসিকিউশনের পক্ষে ফর্মাল চার্জ দাখিল করেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর সাইমুম রেজা তালুকদার। পরে গত ১০ আগস্ট এ মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি পলাতক চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বিকেলে রামপুরায় হোটেলে কাজ শেষে ঢাকায় থাকা ফুফুর বাসায় ফিরছিলেন আমির হোসেন। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। বনশ্রী-মেরাদিয়া সড়কের দুই পাশে পুলিশ-বিজিবির গাড়ি দেখে ভয়ে প্রাণ বাঁচাতে পাশে থাকা একটি নির্মাণাধীন চারতলা ভবনের ছাদে ওঠেন।
ওই সময় পুলিশও তার পিছু পিছু যায়। একপর্যায়ে জীবন বাঁচাতে ওই নির্মাণাধীন ভবনটির ছাদের কার্নিশের রড ধরে ঝুলে থাকেন আমির। কিন্তু তাকে দেখে ফেলে পুলিশ। পরে তার ওপর ছয়টি গুলি ছোড়েন এক পুলিশ সদস্য। এতে তিনতলায় পড়ে গেলে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করেন। এরপর বনশ্রীর একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই দিন রাতেই তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকরা। সেখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরেন ভুক্তভোগী এই তরুণ।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন