ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে রবি ও বাংলালিংকের অভিযোগ

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫, ১২:০১ এএম

যেসব বিষয়ে অভিযোগ

  • গ্রামীণফোন বাজার প্রতিযোগিতায় আগ্রাসী কৌশল ব্যবহার করে কৃত্রিমভাবে সিমের দাম কমাচ্ছে
  • প্রতারণামূলক মূল্য নির্ধারণ করছে 
  • খুচরা বিক্রেতাদের নিয়ন্ত্রণে বৈষম্যমূলক শর্ত আরোপ করছে
  • ফলে প্রতিযোগিতা আইনের লঙ্ঘন হয়েছে
  • এতে প্রতিযোগী অপারেটরদের বাজারে প্রবেশাধিকার সীমিত হচ্ছে
  • দীর্ঘ মেয়াদে একচেটিয়া পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে

দেশের শীর্ষ মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে সিম বিক্রিতে প্রতিযোগিতা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে দুই অপারেটর রবি আজিয়াটা ও বাংলালিংক। তারা প্রতিযোগিতা কমিশনে এ অভিযোগ করে। রবির অভিযোগের পর গ্রামীণফোন এ বিষয়ে প্রতিযোগিতা কমিশনের বিচারিক এখতিয়ার নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেছিল, যা গতকাল সোমবার খারিজ করে অভিযোগ আমলে নিয়েছে কমিশন। প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন এ এইচ এম আহসান বলেন, অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী সময়ে শুনানির তারিখ জানানো হবে।

রবি গত জানুয়ারিতে গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা কমিশনে অভিযোগ করেছিল। বিষয়টি নিয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর প্রতিযোগিতা কমিশনের কার্যালয়ে শুনানি হয়। এতে তিন অপারেটরের আইনজীবী অংশ নেন। শুনানিতে গ্রামীণফোন ও রবি তাদের বক্তব্য তুলে ধরে। তবে বাংলালিংক আরও সময় চেয়ে আবেদন করে।

রবির অভিযোগে বলা হয়েছে, গ্রামীণফোন বাজার প্রতিযোগিতায় আগ্রাসী কৌশল ব্যবহার করে কৃত্রিমভাবে সিমের দাম কমাচ্ছে, প্রতারণামূলক মূল্য নির্ধারণ করছে এবং খুচরা বিক্রেতাদের নিয়ন্ত্রণে বৈষম্যমূলক শর্ত আরোপ করছে। এর ফলে প্রতিযোগিতা আইনের লঙ্ঘন হয়েছে। এতে প্রতিযোগী অপারেটরদের বাজারে প্রবেশাধিকার সীমিত হচ্ছে এবং দীর্ঘ মেয়াদে একচেটিয়া পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। বাংলালিংকও প্রায় একই অভিযোগ করেছে। এ অভিযোগের শুনানি হবে আগামী মাসে।

রবি ও বাংলালিংক কমিশনের কাছে গ্রামীণফোনের সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম তদন্ত করা, উৎপাদন ও বিপণন খরচের চেয়ে কম দামে সিম বিক্রি বন্ধে নির্দেশনা, অস্বাভাবিক মূল্য নির্ধারণ রোধ করা, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া এবং বাজারে ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ চেয়েছে। রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, রবি কমিশনকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বাজারে সুস্থ প্রতিযোগিতা জোরদার করে, এমন নীতি ও অনুশীলনের পক্ষে তাদের সমর্থন থাকবে।

গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে প্রতিযোগিতা কমিশনের আদেশের কথা তারা জানতে পেরেছে। তবে আদেশের কোনো প্রত্যায়িত অনুলিপি পায়নি। তাই এ বিষয়ে এখনই বিস্তারিত মন্তব্য তারা করতে পারছে না। বিবৃতিতে বলা হয়, গ্রামীণফোন প্রতিযোগিতা আইন মেনে ব্যবসা করছে। তারা কোনো প্রতিযোগিতাবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত নয়।

দেশের টেলিযোগাযোগ খাত বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। বিটিআরসি নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাজারে প্রবেশ, মূল্য নির্ধারণ এবং সব প্রতিযোগিতামূলক কার্যক্রমের তদারকি করে থাকে। গ্রামীণফোন এখন একটি সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার বা তাৎপর্যপূর্ণ বাজার ক্ষমতাসম্পন্ন (এসএমপি) অপারেটর হিসেবে কঠোর নিয়ন্ত্রক নির্দেশনার ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন।