পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে দুদকের তিন মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে আরও ১২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। গতকাল বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন তাদের সাক্ষ্য শুনেছেন। তাদের সাক্ষ্য শেষে আগামী ২৯ অক্টোবর সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন আদালত।
সাক্ষীরা হলেন প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের পরিচালক-২ আল মামুন মিয়া, রাজউকের উপসচিব তানজিল্লুর রহমান, সাঁট মুদ্রাক্ষরিক জাকির হোসেন এবং সাব-রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমান ও জাহিদুর রহমান। সংশ্লিষ্ট আদালতের স্টেনোগ্রাফার সোহানুর রহমান জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার মামলায় পাঁচজন, পুতুলের মামলায় পাঁচজন এবং জয়ের মামলায় দুজন সাক্ষ্য দিয়েছে। তিন মামলায় এই পাঁচজন ঘুরেফিরে ১২ জনের সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে আসামিরা পলাতক থাকায় সাক্ষীদের জেরা হয়নি।
এর আগে এসব মামলায় গত ১১ আগস্ট প্রথম দিনে তিন মামলার তিন বাদী, ২৬ আগস্ট পৃথক তিন মামলায় ১৭ জন এবং তৃতীয় দিন ২ সেপ্টেম্বর ১৮ জন, ১৭ সেপ্টেম্বর ১০ জন এবং ৩০ সেপ্টেম্বর আরও ৯ জন সাক্ষ্য দেন। গত ৩১ জুলাই পৃথক ছয় মামলায় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা পরিবারের সাত সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এসব মামলায় শেখ পরিবারের অন্য আসামিরা হলেনÑ শেখ রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, আরেক মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক।
শেখ পরিবার ছাড়া অন্য আসামিরা হলেনÑ জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে এই ছয় মামলা করে দুদক। সবগুলো মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তারা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রাস্তার ছয়টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’