চূড়ান্ত হতে পারে ১৬টি আসনে বিএনপির প্রার্থী

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম নগর ও জেলার মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির নেতারা মনোনয়ন পরীক্ষার মুখোমুখি। গুলশানে বিএনপির কার্যালয়ে আজ রোববার বিকেলে এই মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র কয়েকজন নেতা ছাড়াও ভার্চুয়ালি অংশ নেবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ বৈঠকে চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনে কারা বিএনপির প্রার্থী হতে পারেন তা চূড়ান্ত হতে পারে। মনোনয়নের জন্য এই পরীক্ষায় ইতিমধ্যে আমন্ত্রণ পেয়েছেন ১৬টি সংসদীয় আসনের প্রায় ৪৫ মনোনয়নপ্রত্যাশী। বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রামের কোনো নেতা আনুষ্ঠানিক বক্তব্য না দিলেও বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগর বিএনপির একাধিক নেতা।

তারা জানান, দলের পক্ষ থেকে প্রার্থিতাপ্রত্যাশীদের বৈঠকের কথা মুঠোফোনে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে অংশ নিতে ইতিমধ্যে ঢাকায় অবস্থান করছেন প্রার্থিতাপ্রত্যাশীরা। শুধু জেলাই নয়, চট্টগ্রাম বিভাগের ৮ জেলার ৩৬টি আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মনোনীত করতে ঢাকায় বৈঠকে ডেকেছে কেন্দ্র। এর মধ্যে রয়েছে কক্সবাজারের ৪টি আসন, রাঙামাটি ১টি, খাগড়াছড়ির ১টি ও বান্দরবানের ১টি আসন। নোয়াখালীর ৬টি, লক্ষ্মীপুরের ৪টি এবং ফেনী জেলার ৩টি আসন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নগর বিএনপির এক নেতা জানান, চলতি বছর আগস্ট মাস থেকে প্রার্থী নির্বাচনে কাজ করছে বিএনপির একাধিক পর্যবেক্ষক দল। একক প্রার্থী ঘোষণার পর দলীয় রাজনীতিতে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে বিএনপির সিনিয়র নেতারা এ কার্যক্রম চালাচ্ছেন বলে জানান তারা। বৈঠকের পর একই দিন বিএনপির পক্ষ থেকে ১৬ আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। শরিকদের জন্য যেকোনো আসন ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে আলোচনাসহ প্রস্তুত থাকার জন্য আগাম নির্দেশনা দেওয়ার কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমকে একাধিকবার কল করেও মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।

তবে দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা আবু সুফিয়ান বলেন, ‘রোববারের (আজ) বৈঠকের বিষয়ে আমাকে কল করে জানানো হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত থাকব ইনশাআল্লাহ।

বৈঠকে কারা উপস্থিত থাকতে পারেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অন্য কারো কথা তো আমি জানি না। আমি শুধু আমার কথা বলতে পারব।’

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচনের ৪ মাস বাকি থাকলেও এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি দেশের বৃহত্তম এই দলটি।

যদিও দলের একাধিক নেতা রূপালী বাংলাদেশের এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য আমরা প্রস্তুত। দল যাকেই মনোনয়ন দেবে, আমরা তার পক্ষেই কাজ করব।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, এক আসনে একাধিক প্রার্থী থাকায় কিছুটা ধীরগতিতে এগোচ্ছে বিএনপি। প্রার্থী ঘোষণার পর দলের মধ্যে যাতে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না হয় সে দিকেই জোর দিচ্ছেন দলীয় প্রধান তারেক জিয়া।

নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে সক্রিয় হয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। চট্টগ্রাম নগর বিএনপি, দক্ষিণ ও উত্তর জেলার নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে নির্বাচনি লড়াই করতে ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছেন বিএনপির অর্ধশত নেতা। তাদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই): বড়তাকিয়া গ্রুপের কর্ণধার বিএনপি নেতা মনিরুল ইসলাম ইউসুফ, ক্লিপটন গ্রুপের মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী।

‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে’

বিস্তারিত পড়ুন

চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি):  উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মো. আজিম উল্লাহ বাহার। এ ছাড়া আরও রয়েছেন উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী, দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক বিচারপতি ফয়সল মাহমুদ ফয়জী, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছালাউদ্দিন ও সরোয়ার আলমগীর এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী।

চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ): উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা কামাল পাশা, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন, তরিকুল আলম, তবিউল আলম, উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু তাহের।

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড): দলটির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরী।

চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী ও বায়েজিদ): সাবেক হুইপ ও সংসদ সদস্য সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের কন্যা বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা, নোমানপুত্র সাঈদ আল নোমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি এস এম ফজলুল হক।

চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান): বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার, উপজেলা বিএনপির সদস্য সামির কাদের চৌধুরী।

চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনীয়া): সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরী। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন চৌধুরী ও সদস্যসচিব আবু আহমেদ হাসনাত।

চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও, বোয়ালখালী ও পাঁচলাইশ আংশিক): নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব  মোস্তাক আহমেদ খান।

চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া): চসিক মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শামসুল আলম।

তারেক রহমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন : মঈন খান

বিস্তারিত পড়ুন

চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী-হালিশহর-খুলশী): বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। নোমানপুত্র সাঈদ আল নোমানের নামও রয়েছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায়।

চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর, পতেঙ্গা, ডবলমুরিং, ইপিজেড ও সদরঘাট): একক প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া): এ আসনে এবার প্রার্থী হতে পারেন সাবেক এমপি গাজী মো. শাহজাহান জুয়েল, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও পটিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য সৈয়দ সাদাত আহমেদ।

চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী): এ আসনে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন, কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম মামুন মিয়া, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ আলী আব্বাস, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক এমপি সরওয়ার জামাল নিজাম।

চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া আংশিক): কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ডা. মহসিন জিল্লুর করিম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মিজানুল হক চৌধুরী। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নরুল আনোয়ার।

ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেবে বিএনপি: তারেক রহমান

বিস্তারিত পড়ুন

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া): মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকায় রয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ মো. মহিউদ্দিন, সাতকানিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জামাল হোসেন এবং লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নাজমুল মোস্তফা আমিন।

চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী): আসনে প্রার্থী তালিকায় দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম হোসাইনী ও সাবেক সদস্য লেয়াকত আলী চেয়ারম্যান।