রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রায়হান মিয়া, ঘাটাইল (টাঙ্গাইাল)

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৫, ০১:০৮ এএম

অতিথি পাখির কলরবে জেগে উঠেছে নদীপাড়

রায়হান মিয়া, ঘাটাইল (টাঙ্গাইাল)

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৫, ০১:০৮ এএম

অতিথি পাখির কলরবে  জেগে উঠেছে নদীপাড়

শরতের বিদায় আর হেমন্তের আগমন; প্রকৃতি বদলের এই সময়ে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় হাজির হয়েছে শীতের দূত, অতিথি পাখিরা। প্রতি বছরের মতো এবারও শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে ধলাপাড়া ইউনিয়নের শহরগোপিনপুর এলাকার খালপাড়, নেদার বিল ও চাপড়া বিলে দেখা মিলছে নানা প্রজাতির অতিথি পাখির।

দূর উত্তরের সাইবেরিয়া থেকে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এরা এসেছে এই উষ্ণ দেশের খালে-বিলে। শীতপ্রধান সেই অঞ্চলে বরফে ঢাকা প্রকৃতির অচলাবস্থা থেকে রেহাই পেতে দক্ষিণমুখী এই যাত্রা। এখানে তারা ডিম ফোটায়, বাচ্চা বড় করে আর উষ্ণতার পরশে কাটায় কয়েকটি মাস।

ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে গোপিনপুর খালপাড়ে দেখা যায় পাখিদের দলে দলে খাবার খুঁজতে। বিকেল নামার আগে পর্যন্ত তারা ব্যস্ত থাকে ওড়াউড়িতে, পানিতে ডুব দিয়ে মাছ ধরায় কিংবা পাখনা ঝাপটে খেলা করা নিয়ে। কেউ একা, কেউ দল বেঁধে ভেসে বেড়াচ্ছে জলে, দৃশ্যগুলো বিমোহিত করছে পথচারী ও স্থানীয়দের।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহাদৎ হোসেন জানান, প্রতি বছর নভেম্বরের শেষ দিকে পাখি আসতে দেখা যায়, কিন্তু এ বছর অক্টোবরের শুরুতেই খালপাড়ে পাখির আনাগোনা শুরু হয়েছে। ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত পাখিদের ডাক আর ওড়াউড়িতে খালপাড় মুখর থাকে। এমন দৃশ্য দেখতে দূরদূরান্ত থেকেও মানুষ আসে।

এলাকাবাসীর মতে, এবার নেদার বিল ও চাপড়া বিলে এসেছে বড় পানকৌড়ি, পাতি কুট, গিরিয়া হাঁস, তিলা হাঁসসহ নানা প্রজাতির পরিযায়ী পাখি। পাশাপাশি বালি হাঁস, পাতি সরালি, কাস্তেচড়া, ধুপনি বক, কানি বক, বেগুনি কালিম ও ভুতিহাঁসের দেখা মিলছে খালের কচুরিপানার ফাঁকে। শিরোমণি ডাকাতিয়া বিল এখন পাখির কিচিরমিচিরে ভরে উঠেছে।

তবে সৌন্দর্যের এই উৎসবের আড়ালে রয়েছে শিকারিদের সক্রিয়তা। স্থানীয় রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকেই গরু-মহিষ চরানো বা ধান চাষের অজুহাতে হাওরে যায়। সন্ধ্যা নামলেই ফাঁদ আর বিষটোপ নিয়ে পাখি শিকারে নামে তারা। ভোর হওয়ার আগেই বিল থেকে পালিয়ে যায়।’

এ বিষয়ে জিবিজি সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষক জুলফিকার-ই-হায়দার বলেন, ‘উত্তরের সাইবেরিয়ায় বরফ পড়া শুরু হলে এসব পাখি উষ্ণতার খোঁজে দক্ষিণে পাড়ি জমায়। প্রতি বছর একই রুট ধরে আসে এবং সময় শেষ হলে আবার ফিরে যায়। এদের পরিযায়ী পাখি বলা হয়।’

প্রকৃতির এই চিরন্তন আগমন-বিদায় চক্রে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের খাল-বিল পরিণত হয়েছে এক অনন্য প্রাণবৈচিত্র্যের আবাসস্থলে। পাখিদের ডাকে, ডানার ছায়ায় আর জলরাশির তরঙ্গে জেগে ওঠে শীতের পূর্বাভাস। অতিথি পাখিরা ফিরে গেলে এই নীরবতা আরও গভীর হয়, কিন্তু ততদিন পর্যন্ত, প্রকৃতি যেন নিঃশব্দে উদযাপন করে তাদের আগমন উৎসব।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!