ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দুদকের করা তিন মামলায় আরও ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ নিয়ে তিন মামলায় ৬৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। মামলাগুলোতে আরও অভিযুক্ত রয়েছেন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।
গতকাল রোববার ঢাকার বিশেষ জজ-৪-এর বিচারক রবিউল আলমের আদালতে পৃথক তিন মামলায় তারা সাক্ষ্য দেন। এরপর আদালত পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ৯ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। এর মধ্যে শেখ রেহানা ও শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনজন। তারা হলেনÑ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওসমান গনি, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের মোটর ক্লিনার উজ্জ্বল হোসেন ও গাজীপুরের কালীগঞ্জের সাবেক সাবরেজিস্ট্রার জাহিদুর রহমান।
আজমিনা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন চারজন। তারা হলেনÑ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওসমান গনি, গাজীপুরের কালীগঞ্জের সাবেক সাবরেজিস্ট্রার জাহিদুর রহমান, কর আইনজীবী হানিফ দিহিদার ও কর অঞ্চল-১০-এর অফিস সহায়ক আবদুর রহিম।
এদিকে, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন চারজন। তারা হলেনÑ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওসমান গনি, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের মোটর ক্লিনার উজ্জ্বল হোসেন, গুলশানের সাবেক সাবরেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলাম ও গাজীপুরের কালীগঞ্জের সাবেক সাবরেজিস্ট্রার জাহিদুর রহমান। আদালতের পেশকার বেলাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটির তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরও দুই আসামিসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আফনান জান্নাত কেয়া।
এই মামলায় অন্য আসামিরা হলেনÑ জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, তদন্তে পরবর্তী সময়ে যুক্ত হওয়া দুই আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

