ঢাকা সোমবার, ০৩ নভেম্বর, ২০২৫

দাবি আদায়ে একাধিক বিক্ষোভ

ঢাকায় যানজট-ভোগান্তি দুঃখ প্রকাশ করল ডিএমপি

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২৫, ০১:১৩ এএম

বিভিন্ন দাবি আদায়ের আন্দোলনে রাজধানীর একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল বিঘিœত হয়ে তীব্র যানজট ও জনভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকার প্রেসক্লাব এলাকা ও আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে, এমপিওভুক্তির দাবিতে ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট এবং প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তকরণের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন গতকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেয়। এ ছাড়া চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট ও ৪৩তম বিসিএস উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার প্রার্থীরাও একই এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। অবস্থান কর্মসূচি ও অবরোধের কারণে প্রেসক্লাব, পল্টন, মতিঝিল, শাহবাগ, বিজয়নগরসহ আশপাশের এলাকায় যান চলাচলে চরম ব্যাঘাত ঘটে। ফলে পথচারী, কর্মজীবী মানুষ ও গণপরিবহন ব্যবহারকারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রের ভঙ্গুর পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল করতে নানা উদ্যোগ নিতে থাকে অন্তর্বর্তী সরকার। শুরুর দিকে সরকারকে সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়, তা হলো আন্দোলনের মাধ্যমে বিভিন্ন গোষ্ঠীর একের পর এক দাবির হিড়িক। দাবি আদায়ের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে আন্দোলনকারীরা বেছে নেন সড়ক অবরোধ বা ব্লকেড কর্মসূচি।

রাজধানীজুড়ে চলমান এই ধারাবাহিক আন্দোলনে সবচেয়ে বিপাকে রয়েছে পুলিশ প্রশাসন। প্রতিদিনই তাদের দায়িত্ব থাকে প্রেসক্লাব, শাহবাগ, জাতীয় প্রেসক্লাব অথবা শিক্ষা ভবনের আশপাশে আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণ করা। কখনো তাদের হাতে থাকে লাঠি, কখনো ব্যারিকেড। কিন্তু অনেক সময় আন্দোলনকারীদের উত্তেজনা ও রাস্তায় বসে পড়ার প্রবণতার কারণে পুলিশও অসহায় হয়ে পড়ে।

ঢাকার ট্রাফিক-ব্যবস্থা এমনিতেই জটিল, তার ওপর প্রতিদিনের আন্দোলন-অবরোধ পুরো ব্যবস্থাকে ভেঙে দিচ্ছে। ফলে পুলিশ বাহিনী যেমন ক্লান্ত, তেমনি নাগরিকেরাও বিরক্ত। অথচ সরকার বা আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে এই অব্যবস্থার স্থায়ী সমাধান দেখা যাচ্ছে না।

গত ৩১ আগস্ট সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১২৩টি সংগঠন ১ হাজার ৬০৪ বার অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে।

ডিএমপির দুঃখ প্রকাশ :

এদিকে অনাকাক্সিক্ষত কারণে যানজট বৃদ্ধির ফলে জনভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ‘বিভিন্ন দাবিদাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে রোববার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি সংগঠন ও গোষ্ঠী একযোগে কর্মসূচি পালন করে। এতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল বিঘিœত হওয়ায় রাজধানীর কোথাও কোথাও ব্যাপক জনভোগান্তি ও তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন, এমপিওভুক্তির দাবিতে ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট, প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়সমূহের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তকরণ, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণের দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে বেশ কয়েকটি সংগঠন অবস্থান করছে। এ ছাড়া চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট ও ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নন-ক্যাডারে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চলছে। ফলে যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, যানজটের কারণে সৃষ্ট জনভোগান্তির জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। জনস্বার্থ রক্ষায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সর্বদা সচেষ্ট। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে দুপুরের পর সড়ক মুক্ত করা হয়। প্রয়োজনীয় পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।