ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

এআই দিয়ে তৈরি জখম হাতের ছবি দেখিয়ে ছুটি নিলেন অফিসকর্মী

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২৫, ০১:২৪ এএম

আমাদের অনলাইন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে ছবি এডিটিং টুলস। কিন্তু সেই প্রযুক্তির প্রভাব কত দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে তার এক অবিশ^াস্য উদাহরণ সামনে এসেছে সম্প্রতি। নিয়মিত কাজ করতে করতে ক্লান্ত অফিসের এক কর্মী। কোনো একটা কারণ দেখিয়ে তো ছুটি নিতেই হয়। কিন্তু সত্যি সত্যি নিজের হাতে জখম করে তো আর কেউ ছুটি নিতে সাহস করবে না। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে এই মিথ্যাকে সত্যি করেই ছাড়লেন এই কর্মী।

গুগলের আপডেটেড ‘ন্যানো ব্যানানা’ নামক একটি এআই টুল ব্যবহার করে এক কর্মী তার হাতের একটি ভুয়া আঘাতের ছবি তৈরি করেন। সেই ছবি দেখিয়ে তিনি সহজেই মানবসম্পদ বিভাগের (এইচআর) কাছ থেকে বেতনসহ ছুটির অনুমোদন আদায় করে নেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক পোস্টের বরাতে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে।

লিংকডইন পোস্টে পুরো ঘটনাটি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন গরিলা ট্রেন্ড টেকনোলজিস্টের প্রতিষ্ঠাতা শ্রেয়াংশ নির্মল। কর্মচারী প্রথমে তার অক্ষত হাতের একটি স্পষ্ট ছবি তোলেন। এরপর তিনি ‘ন্যানো ব্যানানা’ এআই টুলটি খোলেন এবং সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত নির্দেশনা বা ‘প্রম্পট’ দেনÑ ‘হাতে একটি আঘাত তৈরি কর।’

আশ্চর্যজনকভাবে, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই এআই একটি এডিটেড তথা সম্পাদিত ছবি তৈরি করে। সেই ছবিতে আঘাতের সূক্ষ্ম ডিটেইলস, রক্তিম ভাব এবং টেক্সচার এমনভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়, যা দেখে মনে হয় সদ্য কেটে যাওয়া একটি তাজা ক্ষত। শ্রেয়াংশ নির্মল সম্পাদিত ছবিটির পাশাপাশি মূল ছবিটিও আপলোড করেছেন।

গুগলের ন্যানো ব্যানানা নামক এআই ইমেজ জেনারেটরের মাধ্যমে সেই কর্মী একটি অত্যন্ত বাস্তবসম্মত ছবি তৈরি করেন। তিনি প্রথমে নিজের হাতের ছবি তুলে ন্যানো ব্যানানাতে আপলোড করেন এবং সেখানেই আঘাতের চিহ্ন যোগ করার নির্দেশ দেন। কিছু সেকেন্ডের মধ্যে এআই এমন একটি ছবি তৈরি করে, যা দেখে মনে হবে সত্যিই হাতটি আহত হয়েছে।

এই ছবি ব্যবহার করে কর্মী অফিসের মানবসম্পদ (এইচআর) বিভাগে তার আঘাতের বিষয়ে জানিয়ে ছুটি নেওয়ার আবেদন করেন। দাবি করেন যে, তিনি বাইক থেকে পড়ে আঘাত পেয়েছেন এবং চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। ছবিটি দেখে সহানুভূতিশীল হয়ে ওই এইচআর কর্মকর্তা দ্রুত ছুটি অনুমোদন করেন, কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই।

২৯ নভেম্বর এই ঘটনাটি লিংকডইনে আসার পর থেকেই এটি হাজার হাজার মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বেশির ভাগ মন্তব্যেই ব্যবহারকারীরা আধুনিক এআই প্রযুক্তির নির্ভুলতা দেখে অবাক হয়েছেন। তবে আলোচনার মোড় ঘুরে যায় কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের দিকে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কিছু ব্যবহারকারী অবাক হয়েছেন, কেউ হাস্যরস করেছেন, আবার কেউ বলেছেন যে, এমন পরিস্থিতি আসলে সংস্থার সংস্কৃতির ফলাফল, যেখানে কাজের চাপ এবং বিষাক্ত পরিবেশ কর্মীদের এই ধরনের পথ বেছে নিতে প্ররোচিত করে।

এআইর এই নতুন প্রয়োগ আনন্দজনক হলেও, এটি অপরাধীদের জন্যও একটি সুযোগ তৈরি করছে, যা ভবিষ্যতে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।