ঢাকা রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

বললেন সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির ইশতেহার হবে গণমানুষের মুক্তির সনদ

চকরিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২৫, ০২:৪২ এএম

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, বিএনপির আগামীর ইশতেহার হবে এ দেশের গণমানুষের মুক্তির সনদ, গণতন্ত্রের মুক্তির সনদ, বাংলাদেশের অধিকার বাস্তবায়নের সনদ। গতকাল শনিবার কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের প্রার্থী হিসেবে চকরিয়ার কৈয়ারবিল ইউনিয়নে ইসলামনগরে নারী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বিএনপির ইশতেহার হবে দেশের মৌলিক গণতান্ত্রিক সংস্কার, গণমানুষ ও অর্থনৈতিক মুক্তিকে লক্ষ্য রেখে। এ জন্য সারা দেশে প্রত্যন্তাঞ্চলে জনগণের দোরগোড়ায় যাওয়া হচ্ছে। গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করছি। বিএনপির ইশতেহার বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ দেশের গণমানুষের অর্থনৈতিক-গণতান্ত্রিক মুক্তি হবে, শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ হবে, সংসদীয় ব্যবস্থার আমূল বৈপ্লবিক সংস্কার হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ইশতেহার বাস্তবায়নের মাধ্যমে সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বিনির্মাণ হবে, গণতন্ত্র শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড়াবে। সেই প্রতিষ্ঠানগুলো গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে। সে রকম একটি নির্বাচনি ইশতেহার প্রণয়ন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তপশিল ঘোষণার পর তা প্রকাশ করা হবে।’

আজ জাতীয় রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ, এ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছি মন্তব্য করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আশা করছি এ সপ্তাহে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। আমরা যতটুকু জানি, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে বাংলাদেশে এ ঐতিহাসিক পরিবর্তনের সূচনাকারী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন শুধু ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠনের জন্য নয়, এ নির্বাচন হবে সারা বিশ্বে স্বীকৃত ও প্রশংসিত একটি নির্বাচন। এ নির্বাচনে জনগণই তার ভোটের পাহারা দেবে, আর কাউকে লাগবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৬-১৭ বছর আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কবলে পড়ে এ দেশের মানুষ ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার হারিয়েছিল। অধিকারহারা নাগরিকরা, অধিকার ভোগ করতে পারেনি। নামে মাত্র গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক শাসনব্যবস্থা চালু থাকলেও প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্রের মুখোশে শেখ হাসিনা বাকশালি কায়দায় একদলীয় শাসনব্যবস্থা, রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করেছিলেন। ফলে দেশের জনগণ রক্ত দিয়ে সেই ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে।’

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘বিএনপি শপথ নিয়েছে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে ও আমাদের নেতা তারেক রহমানের পরিচালনায় বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী স্থায়ী গণতান্ত্রিক কাঠামো তৈরি করব। জনগণ ও তারুণ্যের চাহিদামতো, শহিদদের প্রত্যাশা অনুযায়ী সাম্যের বাংলাদেশ গঠন করা হবে। সেই লক্ষ্যে বিএনপি কাজ করছে।’

বিএনপি দেশের জন্য জনকল্যাণে কাজ করে উল্লেখ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘গণতান্ত্রিকভাবে আমাদের সবার বক্তব্য দেওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু ওই বক্তব্য দেওয়ার অধিকার নেই, যে বক্তব্য সব জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের ভোটে আগামীতে বিএনপি সরকার গঠন করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। বাংলাদেশ হবে কৃষকের। কৃষকের জন্য কৃষি কার্ডের ব্যবস্থা করা হবে, কৃষকেরা ন্যায্যমূল্যে সার-ওষুধসহ সব কিছু পাবে এবং সহজ শর্তে কৃষিঋণের ব্যবস্থা করা হবে। এ দেশে সবার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হবে। কোনো মানুষ বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করবে না। সব দরিদ্র পরিবারকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে নিয়ে আসব। তাদের পারিবারিক কার্ড দেওয়া হবে। তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য চাল, ডালসহ সব কিছু দেওয়া হবে।’

সমাবেশে ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট হাসিনা আহমদ, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা, দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী, পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হেফাজতুর রহমান, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ত্রয়োদশ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে গত ২ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনি এলাকায় আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন বিএনপির অন্যতম এ শীর্ষ নেতা।