জুলাই এলে মনে পড়ে
--নূর-ই-ইলাহী
লাল জুলাইয়ের বাঁকে বাঁকে প্রতিবাদের ঘাম।
বৈষম্য বিমোচনে দিতেই হলো দাম
দিতেই হলো রক্ত নদী ঝরল তাজা প্রাণ
বিপ্লবীরা বীজ বুনেই রাখল দেশের মান।
ওয়াসিম আনাস বাঁধন রুবেল শহীদ শাহরিয়ার
অধিকারের দাবি নিয়ে ফিরল নাতো আর!
বীরের মতো বুকটি পেতে আবু সাঈদ সেদিন
গুলির তোড়ে ঝাঁজরা হয়ে বাজাল এক বীণ।
সেই বীণেরই মোহন সুরে আকাশ হলো ভারী
ভাবছে সবাই হীরক রাণীর পতন তাড়াতাড়ি
আকাশ থেকেও ছুড়ল গুলি রক্ত ছোপ ছোপ
ঝরল কত ইয়ামিন পাখি মুগ্ধ রিয়া গোপ।
বলল সবাই চলুক জুলাই শেষ হবে না মাস
চলল গুলি নির্বিচারে লাশের ওপর লাশ!
ফরিদ ফারুক চোখ হারাল আলো নিভু নিভু
সাইদুল তার চোখের জ্যোতি পাইনি ফিরে কভু।
সিফাত ছিল কিশোর ছেলে কি দোষ ছিল তার?
স্বপ্নগুলো সস্তা দামে কিনবে না সে আর!
দেয়ালগুলো দিলাম এঁকে ঘৃণার তুলিতে
পারবে কি লাল জুলাইয়ের স্মৃতি ভুলিতে?
জুলাইয়ের বজ্রস্বাক্ষর
--বিচিত্র কুমার
হঠাৎ বৃষ্টি আষাঢ়-শ্রাবণ
কোটা বৈষম্যের ডাক,
ছাত্রসমাজ জেগে ওঠে
বঙ্গের তরুণ বাঘ।
মিছিল চলে মিছিল চলে
হঠাৎ বুকে গুলি,
কেঁপে ওঠে বাংলাদেশ
আবু সাঈদের বলি।
রক্ত নদীর হুলি খেলে
স্বৈরাচারী শাসন,
বুকের ভেতর আগুন জ্বলে
রক্ষা করে আসন।
দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে
মুগ্ধ ভাইয়ের নাম,
শত শত শহিদ ভাই
জীবন করে দান।
রক্তের প্লাবন
--মো. আশতাব হোসেন
জুলাই আগস্ট ইতিহাসের অমর অধ্যায়
টগবগের রক্ত আগুনে উত্তাপ বাতাস,
রাজপথ ছাত্র জনতার আশার ভরসা
জানের মায়া নেই বিপ্লবীদের বুকে।
সকল বীর যোদ্ধা অনড় আপোসের রাস্তা রুদ্ধ
ফয়সালা করতে হবে স্বৈরাচার পতনের মাধ্যমে
সারা বাংলার পথে-ঘাটে তাজা রক্তের প্লাবন,
সবার মনে শহিদের তেষ্টা পিছু হটবে না কেউ।
গুলি বক্ষ ভেদ করতে পারবে তবে লক্ষ্যে নয়
জুলুমের কবল থেকে মুক্তিকামীরাই লক্ষ্য ভেদ করবে!
বেপরোয়া হয় আরও অধিক রক্তখেকোদের কম্পিত হৃদয়
শেষ কামড় মারতে থাকে স্বাধীন পতাকার বিক্ষত বুকে,
নিরাপত্তা হারায় আকাশে উড়ন্ত পাখিরা,
জমিনে বর্বরতার চিহ্ন প্রতিমুহূর্তে সীমা ছেড়ে যায়
শহিদের সংখ্যায় যুক্ত হতে থাকে শিশু কিশোরের নাম!
সাধারণ শিক্ষার্থী সকল শকুনের চক্ষুশূল
নির্বিচারে জেল-জুলুম গুম খুন মিশন জোরদার,
তল্লাশির নামে চলে পশু তা-ব প্রতি নিবাসে
স্বস্তির স্থান হারায় শহর গ্রামের অলিগলি,
দমার পাত্র নয় সর্বসাধারণ চলছে পতন অগ্নি ঝড়
জুলুমের সকল হাত উড়ে যায় উত্তপ্ত প্রশ্বাসে!