ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের (মসিক) অব্যবস্থাপনা ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বলাশপুর এলাকায় দীর্ঘ ছয় বছর ধরে দুর্ভোগে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার বেহাল দশায় সামান্য বৃষ্টিতেই অলিগলি ও বাসাবাড়ি ডুবে যায়।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কারিতাস মোড় পর্যন্ত প্রায় ৭২০ মিটার সড়কের উন্নয়নকাজ শুরু হলেও ধীরগতিতে চলছে। খোলা ড্রেন ও অসমাপ্ত সড়কের কারণে তিন চাকার যানবাহন তো দূরের কথা, হেঁটেও চলা যায় না।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, এলাকার প্রধান এ সড়কের উন্নয়নে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজ শুরু করে ‘বিসমিল্লাহ বিল্ডার্স’। গত বছরের ৫ আগস্ট কাজ শুরু হলেও ঠিকাদার মাঝপথে রাস্তা খুঁড়ে ও ড্রেন খোলা রেখেই কাজ বন্ধ করে দেন। এতে সৃষ্ট গর্ত, উঁচু-নিচু সড়ক ও খোলা ম্যানহোলে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আসাদুজ্জামান সোহাগ বলেন, ‘দুই বছর ধরে এই রাস্তার কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ঠিকাদার কাজ ফেলে পালিয়ে গেলে অবস্থা আরও খারাপ হয়। পরে নতুন করে কাজ শুরু হলেও ধীরগতিতে চলছে। আমরা নিজের টাকায় ড্রেনের ওপর সøাব বসিয়েছি, কারণ সেখান দিয়েও হাঁটা যেত না।’
একই কথা বলেন বাসিন্দা সোহেল রানা। তিনি বলেন, ‘এই এলাকা অন্য এলাকার চেয়ে নিচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই অলিগলি পানিতে তলিয়ে যায়। দুই মাস ধরে রাস্তার কাজ চলছে কিন্তু রাস্তার মাঝে বড় বড় ম্যানহোল খোলা থাকায় মানুষ ঠিকভাবে চলাচলও করতে পারছে না। অথচ আমরা নিয়মিত কর দেই।’অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী খোকন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আংশিক কাজ করে ঠিকাদার পালিয়ে যায়। এখন নতুন প্রশাসক আসার পর আবার কাজ শুরু হয়েছে, কিন্তু কাজের মান ও গতি দেখে মনে হয় দায়সারা ভাবে চলছে। এতে শুধু অর্থের অপচয় হচ্ছে।’
ঠিকাদার মাহমুদুল হাসান খান মারুফ দাবি করেন, ‘৭২০ মিটার সড়কের কাজের দায়িত্ব পেয়েছি। এস্টিমেট অনুযায়ী কাজ করছি। কিন্তু স্থানীয়রা গাইডওয়ালসহ অতিরিক্ত কাজের দাবি করছে, যা বরাদ্দে নেই। এতে বাধার মুখে পড়ছি। আশা করছি, আগামী ১০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব।’
এ বিষয়ে মসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার দুর্ভোগের বিষয়টি জানা আছে। ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ধীরগতি থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ছয় বছর ধরে চলা এ দুর্ভোগের দ্রুত ও টেকসই সমাধান না হলে জনরোষ বাড়বে। তারা আশা করছেন, সিটি করপোরেশন এবার দায়িত্ব নিয়ে যথাযথভাবে কাজটি সম্পন্ন করবে।