যে শহরে বাস করি, সেখানে ধূমপান না করেও চেইন স্মোকারের উপাধি পাওয়া মোটেই কষ্টসাধ্য নয়। ঢাকা কিংবা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি শহরের মানুষ যখন নিজের জীবন নিয়ে হাঁপিয়ে উঠে, যান্ত্রিকতা থেকে বের হতে চায়, একটু আলো বাতাসে ভরা সবুজ ভূমিতে প্রাণভরে নিশ্বাস নিতে চায়। তাদের জন্য দুর্গাপুর এক ভরসার নাম। চিনামাটির পাহাড় আর সোমেশ্বরীর নীল জলরাশি নেত্রকোনার পর্যটন মানচিত্রে দুর্গাপুর নিঃসন্দেহে সবচেয়ে উজ্জ্বল। মেঘালয় সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত এই উপজেলা প্রকৃতির এক অসাধারণ চিত্রপট এঁকেছে।
বিজয়পুর চিনামাটির পাহাড় ও নীল হ্রদ
দুর্গাপুরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হলো বিজয়পুর চিনামাটির পাহাড়। স্বচ্ছ জলে পাহাড়ের প্রতিচ্ছবি আর সবুজের সমারোহ যেন কোনো শিল্পীর আঁকা ছবি। এই দৃশ্য এতটাই মনোমুগ্ধকর যে, মনে হবে আপনি কোনো শিল্পীর ক্যানভাসে আঁকা ছবির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। প্রাণভরে নিশ্বাস নিতে এর চেয়ে আর কী প্রয়োজন!
তা ছাড়াও এখানে রয়েছে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তসংলগ্ন বিজিবি ক্যাম্প। এই জায়গা থেকে ভারতের মেঘালয়ের সবুজ পাহাড়, মেঘ উপভোগ করতে পারবেন। সোমেশ্বরী নদীর পাশে বিজিবি ক্যাম্প থাকায় আশপাশের জায়গা দেখার জন্য নৌকাভ্রমণও করা যায়।
দুর্গাপুর থেকে কলমাকান্দা পর্যন্ত সীমান্ত সড়ক দিয়ে বর্ডার ড্রাইভে মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করা যায়। দেখা যায় হাজং রাশিমণি স্মৃতিসৌধ, যা টঙ্ক আন্দোলনে শহিদ হাজং রাশিমণির সাহসী আত্মত্যাগের স্মরণে নির্মিত।
বিজয়পুরের অন্যতম আকর্ষণ হলো, কমলা বাগান। বিজয়পুর বিজিবি ক্যাম্পের কাছে এই কমলা বাগান এলাকার একটি বহুল পরিচিত পর্যটন পাহাড় স্পট, যেখানে ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের সুন্দর দৃশ্য এবং রয়েছে মৌসুমি কমলাগাছ।
যেভাবে যাবেন :
ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করে বাসে দুর্গাপুর, ট্রেনে নেত্রকোনা বা ব্যক্তিগত পরিবহনে আসা যায়। ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে বিরিশিরি যাওয়ার বাসের মাধ্যমে। কিংবা কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে হাওর এবং মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে নেত্রকোনা রেলস্টেশনে নেমে, মোটরসাইকেল কিংবা সিএনজি যোগে, এ ছাড়াও শ্যামগঞ্জ নেমে দুর্গাপুরে যাওয়া যায়। পাশাপাশি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে জারিয়া রেলওয়ে স্টেশন নেমেও দুর্গাপুর যাওয়া যায়।
হুমায়ুন আহমেদ নাইম
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন