শারদীয় দুর্গাপূজা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। এই বছরও প্রতিমা বিসর্জন আর বিষাদের সুরে শেষ হয়েছে এই উৎসব। প্রতিটি মন্দির-মণ্ডপে একদিকে আনন্দ, অন্যদিকে বিষাদের সুর বেজে উঠেছে। দেবী দুর্গাকে বিদায় জানাতে ভক্তরা একে অন্যকে সিঁদুরে রাঙিয়ে সিঁদুর খেলা করেছেন, নাচ-গান করে আনন্দে মেতে উঠেছেন, যেন সারা বছর এমনই আনন্দ বিরাজ করে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, মহামায়া দেবী দুর্গা গজে (হাতি) চড়ে মর্ত্যলোকে এসেছিলেন এবং দোলায় চড়ে কৈলাশে ফিরে যাচ্ছেন। দশমীর শাস্ত্রীয় পূজা শেষে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানাতে বিভিন্ন মন্দিরে সিঁদুর খেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিমা বিসর্জন প্রক্রিয়া শুরু হয় রাত ৭টার পর, যদিও বৃষ্টি উপেক্ষা করে উৎসাহী ভক্তরা শোভাযাত্রায় যোগ দেন।
এ বছর জেলা শহরের বেশিরভাগ মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন হয় বারঘরিয়া ও হুজরাপুর এলাকার মহানন্দা নদীতে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ ব্যবস্থা নেয় যাতে প্রতিমা বিসর্জন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়। মন্দির-মণ্ডপগুলোতে এক উন্মাতাল পরিবেশে, শিশুকিশোর, যুবক-যুবতী, এমনকি বয়স্করা সিঁদুর খেলা ও আনন্দ উৎসবে অংশ নেন।
বিসর্জনের আগে, প্রতিটি মন্দিরে একত্রিত হয়ে ভক্তরা দেবী দুর্গাকে দর্শন ও বিদায় জানান। ঢাক, ঢোল, করতাল এবং অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে শোভাযাত্রায় যোগ দেন নানা বয়সী মানুষ। ভক্তরা নেচে-গেয়ে, মুখে সিঁদুর মেখে এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন। তারপর, ট্রলি, ভ্যান, পিকআপে করে প্রতিমাগুলো মহানন্দা নদীর ঘাটে নিয়ে আসা হয়, যেখানে আরতির মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানো হয়।
এভাবে শারদীয় দুর্গাপূজা সমাপ্ত হয়, এবং আগামী শরতে আবার বাঙালি হিন্দুর ঘরে ঘরে মা দুর্গা ফিরে আসবেন- এ কামনায় অপেক্ষা করেন ভক্তরা।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন