বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ইনসান সাগরেদ, পঞ্চগড়

প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৫, ০৮:০৮ এএম

মালিকানা দ্বন্দ্বে চা-কারখানা দখল কাজ হারানোর ঝুঁকিতে শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী

ইনসান সাগরেদ, পঞ্চগড়

প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৫, ০৮:০৮ এএম

মালিকানা দ্বন্দ্বে চা-কারখানা দখল কাজ হারানোর ঝুঁকিতে শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী

পঞ্চগড়ে একটি চা-কারখানা দখলের অভিযোগ উঠেছে। মালিক পক্ষের একটি গ্রুপসহ স্থানীয় কয়েকজন চা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করেছেন কারখানাটির দুজন পরিচালক। জেলা প্রশাসন, স্থানীয় টি বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে তারা এই অভিযোগ করেছেন। অভিযোগকারীরা হলেনÑ আব্দুর রাজ্জাক ও তারিকুল ইসলাম।

মালিকানা দ্বন্দ্বের কারণে চা-কারখানাটি বন্ধের উপক্রম দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, মালিক পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে চা-কারখানাটি বন্ধ হয়ে গেলে কারখানায় কর্মরত  শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়বে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে তৎকালীন পঞ্চগড় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী বোরহান উদ্দিনের ছায়া উদ্যোগে সদর উপজেলার কেচেরাপাড়া গ্রামে ৭ বিঘা জমির ওপর উত্তরা গ্রিন টি ইন্ডাস্ট্রিজ নামে চা-কারখানা স্থাপন করা হয়। তিনি সরকারি কর্মকর্তা বলে নিজের নামে জয়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে রেজিস্ট্রেশন না করে তার বিশ্বস্ত কাজী এ এন এম আমিনুল হকের নামে ৬৫ শতাংশ মালিকানা উল্লেখ করে কারখানার রেজিস্ট্রেশন করা হয়।

৩০ শতাংশের মালিক হন আব্দুর রাজ্জাক এবং ৫ শতাংশের মালিক হন তারিকুল ইসলাম। পরবর্তী সময়ে কাজী আমিনুল হক বোরহান উদ্দিনের স্ত্রী আইরিন পারভিনের নামে ১০, ছেলে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শায়মান সাদিকের নামে ৩৫, তার ভায়রা শাহ আলমের নামে ১০ শতাংশ শেয়ার হস্তান্তর করেন।করোনা সংকটকালে কাজী আমিনুর রহমান মারা গেলেও তার নামে এখানো ১৫ শতাংশের শেয়ার রয়েছে।

অন্যদিকে আব্দুর রাজ্জাক ও তারিকুল ইসলাম মালিকানা রিশিডিউল করে ২০ ও ১০ শতাংশের মালিক হন। ঢাকার রূপালী ব্যাংক, দিলখুশা স্থানীয় কার্যালয় থেকে মর্টগেজকৃত ২৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে এ সময় বোরহান উদ্দিন এবং আব্দুর রাজ্জাকের পরিচালনায় ৬ লেনের এই কারখানা চা উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখে।

কারখানায় প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়। পরে হিসাব-নিকাশের গরমিলের অভিযোগ তুলে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার সাদাত সম্রাটের শেল্টারে কারখানা থেকে পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক এবং তারিকুল ইসলামকে বের করে দিয়ে পুরো কারখানা দখলে নেন বোরহান উদ্দিন।

পরবর্তী সময়ে নানা ধরনের রাজনৈতিক হুমকি দিয়ে বোরহান উদ্দিনের পরিবারের কাছে ২০২২ সালের ২৪ মার্চ এই দুই পরিচালককে শেয়ার হস্তান্তরের জন্য একটি চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন। চুক্তিপত্র অনুযায়ী দুই পরিচালকের পাওনা ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা তিন মাসের মধ্যে পরিশোধ করার কথা। এর মধ্যে ৫০ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও বাকি টাকা এখনো পরিশোধ করেননি। ৫ আগস্টের পর কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তি সময়ে স্থানীয় কয়েকজন চা ব্যবসায়ীর কাছে বোরহান উদ্দিন, তার স্ত্রী, ছেলে এবং ভায়রা মিলে তিন বছরের জন্য কারখানা লিজ দেন।

অভিযোগকারী আব্দুর রাজ্জাক এবং তারিকুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ শাসনামলে আমাদের জোর করে বের করে দেওয়া হয়। জয়েনস্টক কম্পানির রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী, আমরা এই কোম্পানির এখনো পরিচালক। আমাদের না জানিয়ে কোম্পানি লিজ দেওয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, আমাদের কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে মালিকানা হস্তান্তরের চুক্তিপত্র করা হয়েছে। সেই চুক্তিপত্রেরও সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে। ব্যাংকঋণের বোঝা টানতে হচ্ছে। আমাদের কারখানায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছি, কোনো বিচার পাচ্ছি না।

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বোরহান উদ্দিন জানান, তারা কারখানার মালিক এটা সত্যি। কিন্তু তারা মালিকানা আমার পরিবারের কাছে হস্তাস্তর করেছে। কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার শেল্টার নেওয়া হয়নি। তারা এখনো আমাদেরকে মালিকানা হস্তান্তর করছে না।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুমন চন্দ্র দাশ জানান, এই অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চা বোর্ড পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফ খান ছুটিতে থাকায় তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এ কারণে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!