সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেছেন আদালত। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তদন্ত কর্মকর্তাকে সশরীর আদালতে হাজির হয়ে মামলার অগ্রগতি জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মাঈন উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেছেন আদালত। ১৪ সেপ্টেম্বর আদালত তাকে সশরীর হাজির হতে বলেছেন। এক যুগ পর এই হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ৪ নভেম্বর মামলার আগের তদন্ত সংস্থা র্যাবের কাছ থেকে নথিপত্র বুঝে নিয়েছে পিবিআই। সংস্থাটি এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।
এই মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজিজুল হক। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, র্যাবের কাছ থেকে মামলাসংশ্লিষ্ট সব কাগজপত্র বুঝে নেওয়া হয়েছে। তদন্তকাজ নতুন করে শুরু করা হচ্ছে।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে গতকাল এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের ধার্য দিন ছিল। কিন্তু পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পক্ষ থেকে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ১২০ বার পেছানো হয়।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় এই সাংবাদিক দম্পতি নৃশংসভাবে খুন হন। সাগর মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক ও রুনি এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ছিলেন।
সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। প্রথমে এই মামলা তদন্ত করছিল শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ। চার দিন পর মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। এরপর আদালত র্যাবকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি লিখিতভাবে র্যাব আদালতকে জানিয়েছিল, সাগর-রুনির বাসা থেকে জব্দ করা আলামতের ডিএনএ পর্যালোচনায় অজ্ঞাতপরিচয় দুই পুরুষের উপস্থিতি মিলেছে। অজ্ঞাতপরিচয় দুই পুরুষকে শনাক্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ইনডিপেনডেন্ট ফরেনসিক সার্ভিসেস (আইএফএস) ল্যাবে ডিএনএ পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে তাদের ছবি তৈরির চেষ্টা চলছে।