- চক্রের ৭ সদস্য গ্রেপ্তার
- ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পেইড সোর্সের মাধ্যমে টার্গেট
ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পেইড সোর্সের মাধ্যমে টার্গেট করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে ডাকাতি করত একটি চক্র। এই চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলোÑ চক্রের প্রধান দ্বীন ইসলাম ওরফে কাউছার আহমেদ, কামাল হাওলাদারসহ তাদের সহযোগী আব্দুর রহমান হাওলাদার, মেহেদী হাসান ওরফে হাসান, বাবুল হাওলাদার, রমিজ তালুকদার ও জান্নাতুল ফেরদৌস। গত বুধবার রাতে গুলিস্তান গোলাপ শাহ মাজারের পাশে লেগুনা স্ট্যান্ড থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় চক্রের আরও পাঁচ সদস্য কৌশলে পালিয়ে যায়। গ্রেপ্তারকালে তাদের কাছ থেকে মাইক্রোবাস, ডিবি জ্যাকেট, ওয়াকিটকি, ভুয়া পুলিশ আইডি কার্ড, হ্যান্ডকাফ, খেলনা পিস্তল, পকেট রাউটার, মোবাইল, এক্সপেন্ডেবল লাঠি ও লেজার লাইট উদ্ধার করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোড মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম।
তিনি বলেন, তারা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রাজধানীর তাঁতিবাজার এলাকায় আসা স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ও ব্যাংক থেকে বড় অংকের টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের টার্গেট করত। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ডাকাতি করত।
ডিসি মাসুদ আলম বলেন, ডাকাত দল রাজধানীর গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজারের দক্ষিণ পাশে লেগুনা স্ট্যান্ডের সামনে ডাকাতি করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শাহবাগ থানার একটি দল অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর সময় সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৪-৫ জন ডাকাত সদস্য কৌশলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ও পলাতকদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেছে পুলিশ।
ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, দ্বীন ইসলামের নামে দশটি, আব্দুর রহমানের নামে তিনটি, মেহেদী হাসানের নামে চারটি, বাবুল হাওলাদারের নামে দুটি ও রমিজ তালুকদারের নামে চারটি ডাকাতি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কোনো কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা চাকরিচ্যুত হয়ে অপরাধে জড়িয়েছেন বেশিÑ এমন প্রশ্নে ডিসি মাসুদ বলেন, সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাকরিচ্যুতরাই অপরাধ কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়ছে। তারা কোনো না কোনো অপরাধ করেছে বলেই চাকরিচ্যুত হয়েছে।
প্রতারক চক্রের সদস্যরা কোনো কৌশলে ভুক্তভোগীদের টার্গেট করে এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি রমনা বলেন, তাদের প্রচুর পেইড সোর্স আছে। তারা সোর্সের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের টার্গেট করে। তারা কোনো ডাকাতি করলে বা তারা কোনো সফল অপারেশন করলে সে ক্ষেত্রে টাকার ভাগ সোর্সেরা বেশি পায়। যদি অপরাধীরা এক লাখ টাকা করে ভাগ পায়, সে ক্ষেত্রে সোর্সেরা দেড় লাখ টাকা পায়। আমরা অনেক সময় দেখেছি তারা বিভিন্ন ব্যাংকে কাজ করার বা টাকা তোলার ভান করে। কিন্তু আসলে তারা সে সময় ব্যাংকে আসা বয়স্ক ব্যক্তি, একা ব্যক্তি বা বড় অংকের টাকা উত্তোলন করতে আসা ব্যক্তিদের ওপর টার্গেট করে।
ভুয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সাধারণ মানুষ চিনবে কীভাবে জানতে তিনি বলেন, জনবহুল এলাকা থেকে যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য পরিচয়ে তুলে নিতে আসে কাউকে, সে সময় আশপাশে ব্যক্তিরা জানতে চাইবেন কোন বিভাগে ও কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন