সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় করা মামলায় কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি ইউসুফ আবদুল্লাহ সুমনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবি। ভুক্তভোগী সাংবাদিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইশরাত হাসান।
গত ২ সেপ্টেম্বর বিকেলে কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে সাবেক ডিসি জামিনের আবেদন করলে বিচারক মোছাম্মৎ ইসমত আরা বেগম তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর সুলতানা পারভীন হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
কুড়িগ্রাম শহরের একটি সরকারি পুকুর সংস্কার করে ডিসির নামে নামকরণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ দিবাগত মধ্যরাতে সাংবাদিক আরিফকে তার বসতবাড়ি ও বসতঘরের গেট ভেঙে তুলে নিয়ে যান জেলা প্রশাসনের তিন ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তাকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার উদ্দেশ্যে জেলা শহরের পূর্বে ধরলা নদীর তীরে নেওয়া হয়।
পরে সেখান থেকে ফিরিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে বিবস্ত্র করে পেটানো হয়। এরপর মাদক রাখার অভিযোগ দিয়ে মধ্যরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাংবাদিক রিগানকে এক বছরের কারাদ- ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদ-ের আদেশ দেওয়া হয়। এ নিয়ে সারা দেশে প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ শুরু হলে এক দিন পর সাংবাদিক রিগানকে জামিন দেয় জেলা প্রশাসন। জামিনে মুক্তি পেয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানায় সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন ও তিন ম্যাজিস্ট্রেটসহ অজ্ঞাত ৩০-৩৫ জনকে আসামি করে এজাহার দায়ের করেন সাংবাদিক রিগ্যান।
পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে কুড়িগ্রাম সদর থানার পুলিশ। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটি তদন্ত করে ঘটনার দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। চার্জশিটে সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন, তৎকালীন আরডিসি নাজিম উদ্দিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা এবং এস এম রাহাতুল ইসলামকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন