‘আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রজেক্ট (২য় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত তিনটি নগর মাতৃসদন কেন্দ্র ও আটটি নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভবন গতকাল মঙ্গলবার উদ্বোধন হয়েছে। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের অনুপস্থিতিতে ভার্চুয়াল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এ সময় তিনি সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গুর ঊর্ধ্বগতি প্রকোপের বিষয়ে বলেন, ডেঙ্গুর সময় এলে হঠাৎ করেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে, সেটা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়।
এ সময় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ক্যানসারে ভুগছেন জানিয়ে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, মানবিক কারণেই তার চিকিৎসা সিঙ্গাপুরে করানো হচ্ছে। উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, দেশের স্বাস্থ্যের পুরো ব্যবস্থাটাই অসুস্থÑ এ কারণেই কি অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চিকিৎসা নিতে বিদেশ গেলেন? এর উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, আমরা জানি স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ক্যানসারে আক্রান্ত। ওনার যে চিকিৎসা, উপদেষ্টা হওয়ার পর থেকেই যে সিঙ্গাপুরে হচ্ছে, বিষয়টা এমন না, অনেক দিন আগে থেকেই উনি সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা নিয়ে আসছেন। ধারাবাহিকতা তো বজায় রাখতে হবে। ক্যানসারে আক্রান্ত হলে উপদেষ্টা হওয়ার পর চিকিৎসার জায়গা বা হাসপাতাল পরিবর্তন তো করা যায় না। আমার মনে হয়, এটা মানবিক বিষয়। এটা মানবিক জায়গা থেকেই দেখা উচিত।
আসিফ মাহমুদ বলেন, এ রকম দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে নিলে অনেক ধরনের সমস্যা হয়, সেটা আপনারা অবগত আছেন। আমি মনে করি, যারা ‘পলিসি মেকিংয়ের’ জায়গায় থাকেন বা সামনে যারা আসবেন, তারা যেন দেশের চিকিৎসাব্যবস্থাটাকে এমন জায়গায় নিয়ে যান, যাতে দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা আমরা দেশেই পেতে পারি।
ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার অনেক উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসাক্ষেত্রে আমরা একটা দেশের ওপর বেশি নির্ভরশীল ছিলাম। আপনারা জানেন, ইতিমধ্যে চীনের সহযোগিতায় দেশে কয়েকটা হাসপাতাল করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি এসেছে। এই কাজগুলো হয়ে গেলে আমি মনে করি, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতে আত্মনির্ভরশীল হবে।
এ সময় সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে আমরা কাজ করছি। তবে আপনারা জানেন ডেঙ্গু নিয়ে কাজের ক্ষেত্র অনেক ব্যাপক। এ জন্য আমাদের জনসচেতনতা থেকে শুরু করে চিকিৎসাব্যবস্থাসহ সব কিছু একসঙ্গে করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি নগরবাসীকে আহ্বান জানাব, যে কারণে ডেঙ্গু হয় বা ছড়ায়, সে বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরিতে কাজ করছি। টিভিসহ বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞাপন যাচ্ছে। এ বিষয়গুলো নগরবাসী অনুসরণ করবে। সবাই সচেতনতার দিকগুলো মেনে চলবে। যাতে এডিস মশার প্রজনন আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। একই সঙ্গে ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারি। উপদেষ্টা বলেন, ডেঙ্গুর সময় এলে হঠাৎ করেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে, সেটা নিয়ন্ত্রণ করা বা মেইনটেইন করা কঠিন হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে আমরা সমন্বয় করছি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।