ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর, ২০২৫

বাংলাদেশে শ্রম সংস্কারকে ত্বরান্বিত করতে

জাতীয় সামাজিক সংলাপ ফোরাম গঠনের আহ্বান

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৫, ১১:৪৫ পিএম

বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই শ্রম সংস্কারের লক্ষ্যে কার্যকর সামাজিক সংলাপকে একটি কার্যকরি পন্থা হিসেবে তুলে ধরতে গতকাল বুধবার শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী উচ্চপর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় সম্মেলন। যার শিরোনাম ‘বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই শ্রম সংস্কারের হাতিয়ার হিসেবে কার্যকর সামাজিক সংলাপ: মানদ-, শিক্ষা এবং ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ওখঙ-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সম্মেলনে সরকার, নিয়োগকর্তা ও শ্রমিক প্রতিনিধি ছাড়াও অংশগ্রহণ করছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামাজিক সংলাপবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা। উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। 

ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘শ্রমিক, নিয়োগকর্তা ও সরকারের মধ্যে পরামর্শ ও সংলাপের সংস্কৃতি তৈরি করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। গত এক বছরে আমরা দেখেছি, যেকোনো বিরোধ বা মতবিরোধ গঠনমূলক ও ইতিবাচক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন একটি বৈধ ও কার্যকর সামাজিক সংলাপের প্ল্যাটফর্ম। আশা করি, এই দুই দিনের সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে একটি স্থায়ী জাতীয় সামাজিক সংলাপ ফোরামের রূপরেখা নির্ধারণ করবেন।’ তিনি আরও জানান, শ্রমিক ও নিয়োগকর্তা সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা শেষে সরকার মন্ত্রিসভায় আইএলওর তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কনভেনশন অনুমোদন করেছে। 

এগুলো হলো, কনভেনশন ১৫৫ (পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য), কনভেনশন ১৮৭ (প্রচার কাঠামো), এবং কনভেনশন ১৯০ (সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধ)। এ সিদ্ধান্ত সরকারের আন্তর্জাতিক শ্রমমান অনুসরণের প্রতিশ্রুতিকে আরও শক্তিশালী করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. সানওয়ার জাহান ভূঁইয়া বলেন, ‘এ ত্রিপক্ষীয় সম্মেলন আমাদের সম্মিলিত অঙ্গীকারের প্রতিফলন। সরকার, নিয়োগকর্তা কিংবা শ্রমিক একা কোনোভাবেই টেকসই সংস্কার নিশ্চিত করতে পারে না। সহযোগিতা, আস্থা ও সামাজিক সংলাপই হবে আমাদের পথনির্দেশক।’
আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর (মনোনীত) ম্যাক্স তুয়োন বলেন, ‘শক্তিশালী সামাজিক সংলাপই টেকসই কর্মসংস্থান ও মর্যাদাপূর্ণ কাজের মূল চাবিকাঠি। এটি শুধু একটি কার্যকরি পন্থা নয়, বরং একটি সংস্কৃতি যা গড়ে তুলতে প্রয়োজন শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, সুদৃঢ় আইনি কাঠামো এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি।’

ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত এক্সেলেন্সি ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলার, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘টিম ইউরোপ ইনিশিয়েটিভ ফর ডিসেন্ট ওয়ার্ক’-এর পক্ষে বলেন, ‘কার্যকর সামাজিক সংলাপ ও যৌথ দরকষাকষির জন্য সংগঠিত ও কাঠামোবদ্ধ কর্মীশক্তি অপরিহার্য। স্বল্পমেয়াদি লাভের চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি বিশ্বাস ও অন্তর্ভুক্তি তৈরিই এ সংলাপের মূল চাবিকাঠি হওয়া উচিত।’ অনুষ্ঠানে শ্রমিক ও নিয়োগকর্তা সংগঠনের প্রতিনিধিরাও স্থায়ী সংলাপ কাঠামো গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।