অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলাকে ‘গণতান্ত্রিক উত্তরণ’ হিসেবে দেখছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তবে একই ধরনের কথাবার্তা শোনার মানসিকতা রাজনৈতিক দলেরও থাকতে হবে বলে মনে করেন তিনি। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্ট পৃথক সচিবালয় এ সরকারের আমলেই করা সম্ভব বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এ কথা বলেন। গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন দলটির নেতারা। তারা মনে করছেন, সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার বক্তব্য, তৎপরতা ও প্রশাসনিক পদায়নে পক্ষপাতমূলক আচরণের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, যা সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণœ করছে।
অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের কোন কোন উপদেষ্টা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তাদের নাম ও কণ্ঠ রেকর্ড আছে বলে দাবি করেছেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
‘উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছে, তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের (নিরাপদ প্রস্থান) কথা ভাবতেছে’ সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
উপদেষ্টাদের নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর এসব প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে আজ সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘উপদেষ্টাদের নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন করা হয়, হুমকি দেওয়া হয়। আমার কাছে মনে হয়, এটা একটা উত্তরণ হয়েছে। আমরা আগের সরকারগুলোর আমলে দেখতাম, যারা সরকারের লোক, তারা রাজনৈতিক দলগুলোকে হুমকি দিতেন। আর এখন উপদেষ্টা পরিষদে থাকা লোকজনকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন পক্ষ থেকে ইচ্ছেমতো, যা মুখে আসে সমালোচনা করা হচ্ছে, হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এটা একটা গণতান্ত্রিক উত্তরণ বলা হয়। তবে যারা রাজনৈতিক দল আছেন, ওনাদের একটু বলে রাখি, একই ধরনের কথাবার্তা আপনাদের সম্পর্কে বললে সেটা শোনার মানসিকতা আপনাদের থাকতে হবে।’
বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, সুপ্রিম কোর্ট সেক্রেটারিয়েট করার বিষয়ে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনে অন্যতম প্রস্তাব। প্রধান বিচারপতির সংস্কার ভাবনাতেও এটি আছে। এ বিষয়ে অনেক দূর কাজ করা হয়েছে। এখন কিছু বিষয়ে মতভিন্নতা আছে। সেটি নিয়ে আরেকটু আলাপের প্রয়োজন রয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ আইনের খসড়া আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন করা হবে। উপদেষ্টা পরিষদ যদি মনে করে, তাহলে এটি পাস করা হবে। এ সরকার তখন সুপ্রিম কোর্টের আলাদা সচিবালয় করতে পারবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন