বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএমইউ) এখন থেকে রোগীদের হাসপাতালে এসে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর আর প্রয়োজন নেই। নতুন অনলাইন টিকিটিং সিস্টেমের মাধ্যমে বাসা থেকেই টিকিট কাটার সুযোগ মিলছে। ফলে নিজের সুবিধাজনক সময়ে ডাক্তার দেখাতে পারবে রোগীরা।
গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মিল্টন হলে পুরোদমে এই সিস্টেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বিস্তারিত তথ্য জানান। এ সময় অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, অনলাইন টিকিটিং সিস্টেম দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার কারণে চালু করা হয়েছে। যে কোনো দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা সব সময় জনগণকেন্দ্রিক হওয়া উচিত। শিক্ষা, গবেষণা ও স্বাস্থ্যসেবা দেশের মানুষের জন্যই হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দেশের জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বহুদিন ধরে ভাবছিলাম, রোগীদের যেন হাসপাতালে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে না হয়। অনলাইন টিকিটিং সিস্টেমের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হবে। রোগীরা নিজের সুবিধাজনক সময়ে ডাক্তার দেখাতে পারবে। সমস্ত কার্যক্রম ধাপে ধাপে অনলাইন হবে। এটি রোগীদের নানা দিক থেকে সুবিধা দেবে। ভিসি এ-ও জানান, মেডিকেল সেক্টরে এআই সিস্টেম চালু করার ব্যাপারে জোরালো চেষ্টা চলছে। বিএমইউ এ ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে। সেবা, চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয় আরও এগিয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘টিকিট কাটতে আর হাসপাতালে দীর্ঘ লাইন দিতে হবে না। আমরা চাই ওয়েটিং টাইমটি চেম্বার বা হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে যেতে। তবে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া ডাক্তার দেখানো যাবে না। কিছু রোগী এখনো এই সিস্টেমের সঙ্গে পুরোপুরি পরিচিত নন। প্রথম পর্যায়ে কিছু সমস্যা হতে পারে, তবে তা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে। ভিসি আরও জানান, বর্তমানে ৯২ শতাংশ রোগী আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সন্তুষ্ট। অনলাইন টিকিটিং চালু হলে এই সন্তুষ্টি আরও বাড়বে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা ও গবেষণা) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে সব সময় ভিড় থাকে। সরাসরি টিকিট কাটতে গিয়ে রোগীরা ভোগান্তিতে পড়ে। মাঝে মাঝে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাও ঘটে। অনলাইন টিকিটিং সিস্টেম এই সমস্যার সমাধান করবে এবং বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।’
প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার রোগী আসে। আউটডোরে এসি না থাকায় এবং অন্যান্য সংকটের কারণে রোগীরা অসুবিধার সম্মুখীন হয়। অনলাইন টিকিটিংয়ের মাধ্যমে রোগীরা যথাসময়ে চিকিৎসক দেখাতে পারবে। প্রতিটি বিভাগের জন্য অনলাইন টিকিটিং প্রযোজ্য হবে। আমরা অব্যাহতভাবে চেষ্টা করছি হাসপাতালের চিকিৎসার মান উন্নত করতে এবং রোগীদের মধ্যে আস্থা বাড়াতে।’

