২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামা সন্ত্রাসী হামলা এবং এর পরবর্তী বালাকোট বিমান হামলার পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক এক অভূতপূর্ব স্থবিরতার মধ্যে রয়েছে। ছয় বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও দুই দেশের মধ্যে কোনো শীর্ষ পর্যায়ের সংলাপ বা দূতের মোতায়েন হয়নি।
উভয় দেশের হাইকমিশনার প্রত্যাহার করার পর শুরু হওয়া এই ভাঙন ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ইতিহাসে দীর্ঘতম স্থবিরতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বলা হচ্ছে- ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ ও বাংলাদেশের সৃষ্টি হলেও, সে দ্বন্দ্ব কাটিয়ে মাত্র চার বছর পরই আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার হয়েছিল দুই দেশের। কিন্তু ২০১৯ সালের ঘটনার ছয় বছর কেটে গেলেও সম্পর্ক এখনো আগের মতো স্বাভাবিক হয়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই স্থবিরতা প্রকৃত যুদ্ধের চেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ও শক্তিশালী হয়ে উঠছে।
১৯৬৫ সালের সংঘর্ষের পর তাসখন্দ চুক্তির মাধ্যমে দ্রুত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধ এবং ২০০১-২০০২ সালের সামরিক অচলাবস্থার সময়ও সীমান্তে সৈন্য মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও উভয় দেশই তাদের রাষ্ট্রদূতদের অবস্থান এবং যোগাযোগের লাইন খোলা রেখেছিল।
সূত্র বলছে, বর্তমানে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদে কূটনৈতিক মিশনে প্রশাসনিক ও কনস্যুলার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, তবে এসবেরও কোনো বাস্তব রূপ বা সংলাপ নেই। হাইকমিশনারদের অনুপস্থিতি দুই দেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক চ্যানেলকে হিমায়িত করে রেখেছে।
একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, প্রকাশ্যে বা গোপন ব্যাক-চ্যানেল প্রচেষ্টা নেই। অতীত সংকটগুলোতে সীমিত সংলাপের সুযোগ অন্বেষণের জন্য ব্যাক-চ্যানেল প্রায়শই ব্যবহার করা হতো, কিন্তু এখন তা দেখা যাচ্ছে না।
রাজনৈতিক কারণগুলোও এই দীর্ঘ নীরবতার পেছনে রয়েছে। নয়াদিল্লি সংলাপ পুনরায় শুরু করার জন্য পাকিস্তানের সীমান্ত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ আশা করছে। অন্যদিকে, ইসলামাবাদ বলছে- ২০১৯ সালের আগস্টে জম্মু ও কাশ্মীরে করা সাংবিধানিক পরিবর্তন বাতিল না করা পর্যন্ত কোনো সংলাপ সম্ভব নয়।
বিশ্লেষকদের মতে, এইসব স্থবিরতা এখন যুদ্ধে রূপ নিচ্ছে।

