ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫

বললেন কৃষি উপদেষ্টা

ডিসেম্বরের মধ্যে সার ব্যবস্থাপনা নীতিমালা চূড়ান্ত হতে পারে

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৫, ১১:০৯ পিএম

আগামী ডিসেম্বর মধ্যে সার ব্যবস্থাপনা নীতিমালা চূড়ান্ত হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। তিনি বলেন, নীতিমালা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এই নীতিমালা তৈরির জন্য ন্যাশনাল লেভেলে মিটিং হয়েছে এবং দ্রুতই এটি সম্পূর্ণ হবে বলে আশা করা যায়। ডিসেম্বরের মধ্যে হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আশা করা যায় হবে। গতকাল বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সারের সরবরাহ, ব্যবহার এবং নীতিমালা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কৃষি উপদেষ্টা বলেন, আজকে সারের ব্যবস্থাপনা, দাম এবং নতুন নীতিমালা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি, সারের কোনো সংকট নেই। পর্যাপ্ত সার মজুত আছে। সারের দামও বাড়বে না। বর্তমানে সারের দাম নি¤œমুখী। তিনি বলেন, ইউরিয়া সারের ব্যবহার নিয়ে সচেতন হতে হবে। কৃষকরা অনেক সময় সার বেশি দিয়ে দেয়, বিশেষ করে ইউরিয়া সার। যদিও ইউরিয়া সার দিলে গাছ বড় ও সবুজ দেখায়, কিন্তু ফলন বাড়ে না। ইউরিয়া সার জমির ক্ষতি করে। তাই ইউরিয়া সারের প্রয়োগ কমানোর জন্য প্রচার চালানো দরকার। ডিএপি সারের ভেতরেও ২০ শতাংশ ইউরিয়া থাকে। তিনি বলেন, সারের নীতিমালা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এই নীতিমালা তৈরির জন্য ন্যাশনাল লেভেলে মিটিং হয়েছে এবং দ্রুতই এটি সম্পূর্ণ হবে বলে আশা করা যায়। ডিসেম্বর মধ্যে হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আশা করা যায় হবে।

নীতিমালার উদ্দেশ্য কী জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, নীতিমালায় কিছু দুর্নীতিবাজদের মোকাবিলা করা হবে এবং অবৈধ লাইসেন্সপ্রাপ্তদের সমস্যা দূর করা হবে (যেমন, একজনকে অপ্রয়োজনীয় লাইসেন্স দেওয়া বা এক পরিবারে তিনজনকে লাইসেন্স দেওয়া)। আগে সার ডিলারদের বিভিন্ন সংস্থার (যেমন- বিসিএস, বিআইডিসি) জন্য আলাদা লাইসেন্স নিতে হতো। নতুন নীতিমালায় একটি লাইসেন্সেই সব ধরনের সার একজন ডিলার এক দোকান থেকে বিক্রি করতে পারবেন। আর নতুন লাইসেন্স দেওয়ার জন্য একটি সেন্ট্রাল কমিটি গঠন করা হবে। সার কারখানায় গ্যাসের দাম বাড়ানোর ফলে কৃষকের সারের দাম বেশি পড়বে কি নাÑ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সার কারখানায় গ্যাসের দাম ১৬ টাকা থেকে ৪০ টাকা হলেও কৃষকের খাতে এর কোনো সম্পর্ক নেই। কৃষকের রেট একই থাকবে এবং সরকার এর জন্য ভর্তুকি দেবে।

কৃষি উপদেষ্টা বলেন, গত সিজনে বোরো আমন ধানের চাষ খুব ভালো হয়েছিল এবং প্রায় ১৫ লাখ টন বেশি উৎপাদন হয়েছিল। বর্তমান আমন ধানের কাটা শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারের আমনও বাম্পার ফসল হবে। গতবার আলুর বাম্পার উৎপাদন হলেও কৃষকরা আলুর সঠিক দাম পাচ্ছে না। আলুর দাম না পাওয়ায় কৃষকদের বড় ধরনের লোকসান হয়েছে। যখন ভালো উৎপাদন হয়, তখন কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, এবার পেঁয়াজের উৎপাদনও ভালো হয়েছে। সরকারের দেওয়া এয়ার ফ্লো মেশিন এবং কৃষকদের নিজস্ব প্রচেষ্টার ফলে এবার পেঁয়াজ আমদানি করতে হচ্ছে না। আমদানি করার জন্য আমদানিকারকরা এখন হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছেন। বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের দাম মোটামুটি একটি সহনীয় পর্যায়ে (৭০-৮০ টাকা) আছে। দামের চেয়ে কম হলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন এই সপ্তাহে শুরু হয়ে গেছে, যা একটি সুখবর। শীতকালীন সবজি বাজারে আসা শুরু হয়েছে এবং ফলনও ভালো।