বর্তমানে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ স্বল্প আয়ের দেশগুলোর কর্মীদের জন্য কাজের ভিসা উন্মুক্ত করছে, যা লাখ লাখ মানুষের কাছে একটি সোনালি স্বপ্নের মতো। উচ্চ বেতন এবং উন্নত কর্মজীবনের আশায় অনেকেই এখন ইউরোপের দিকে ঝুঁকছেন। তেমনি একটি দেশ হলো রোমানিয়া, যা ২০২৫ সালের মধ্যে বিপুলসংখ্যক বিদেশি কর্মী চলে গিয়েছে আরও যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। এই সুযোগ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের কর্মীদের জন্য উন্মুক্ত। এই সুযোগ নিতে হলে এবং দালালদের প্রতারণা এড়িয়ে বৈধভাবে রোমানিয়ায় প্রবেশ করতে চাইলে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা জরুরি।
বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য রোমানিয়ার কাজের ভিসা
বাংলাদেশি কর্মীরা এখন আনুষ্ঠানিকভাবে রোমানিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই ভিসার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো-
কম খরচ:
এই প্রক্রিয়ায় তুলনামূলকভাবে কম খরচে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
স্বল্প সময়ে ভ্রমণ:
দাবি করা হচ্ছে, এই প্রক্রিয়ায় মাত্র ৩০ দিনের মধ্যে কর্মীদের রোমানিয়া ভ্রমণের সুযোগ তৈরি হতে পারে (যদিও বাস্তবে প্রক্রিয়াটি আরও সময়সাপেক্ষ)।
অভিজ্ঞতার বাধ্যবাধকতা নেই:
দক্ষ ও অদক্ষ উভয় ধরনের কর্মীই আবেদন করার সুযোগ পাবেন। ভিসা অনুমোদনের ক্ষেত্রে যদিও সরকারিভাবে কর্মী নিয়োগের কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু চূড়ান্ত ওয়ার্ক পারমিট ভিসা একটি রোমানিয়ান কোম্পানির মাধ্যমে অনুমোদিত হবে। তাই আবেদন করার আগে আপনি ভিসার জন্য উপযুক্ত কিনা, তা যাচাই করে নেওয়া প্রয়োজন।
রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া
রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে কয়েকটি প্রধান ধাপ অনুসরণ করতে হবে। এই প্রক্রিয়াটি বাড়ি
বসে মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমেই সম্পন্ন করা সম্ভব-
ধাপ ১, ওয়েবসাইট ভিজিট, রোমানিয়ার শ্রম মন্ত্রণালয় বা দূতাবাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
ধাপ ২, চাকরির অফার সংগ্রহ, রোমানিয়ার অনুমোদিত কোনো নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চাকরির অফার লেটার বা কোম্পানির স্পন্সরশিপ নিশ্চিত করুন।
ধাপ ৩, আবেদন ফরম পূরণ, ওয়ার্ক পারমিট আবেদন ফরমটি অনলাইনে বা নিবন্ধিত এজেন্সির মাধ্যমে পূরণ করুন।
ধাপ ৪, নথিপত্র সংযুক্তিকরণ, ‘সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (পাসপোর্ট, চাকরির অফার, মেডিকেল সার্টিফিকেট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এবং শিক্ষাগত সনদ) সংযুক্ত করুন।’
ধাপ ৫, আবেদন জমা ও ফি প্রদান, অনলাইনে আবেদন জমা দিন এবং ভিসার ফি পরিশোধ করুন।
ধাপ ৬, পারমিট নিশ্চিতকরণ, প্রথমে কোম্পানির অনুমোদন এবং এরপর ওয়ার্ক পারমিট নিশ্চিতকরণের জন্য অপেক্ষা করুন।
ধাপ ৭, এন্ট্রি ভিসার জন্য আবেদন, পারমিট অনুমোদনের পর রোমানিয়া এন্ট্রি ভিসার জন্য দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করুন। অনলাইন পোর্টাল, অফিসিয়াল রোমানিয়া ই-ভিসা পোর্টাল ভিজিট করুন।
ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা ও শর্তাবলি:
রোমানিয়াতে কাজের জন্য বৈধ উপায়ে প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে। আবেদনকারীকে একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক যোগ্যতা পূরণ করতে হবে। রোমানিয়া পূর্ব ইউরোপের একটি সুন্দর দেশ, তবে এর ভিসা প্রক্রিয়ায় কিছু জটিলতা থাকতে পারে। এসব জটিলতা অতিক্রম করে বৈধ অনুমোদন নিতে হবে। চাকরির সুযোগ এবং বাণিজ্যিক প্রস্তুতি এই দেশে খুবই ভালো।
ভিসা প্রসেসিং সময়:
বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ১৫ দিনের মধ্যে রোমানিয়া যাওয়ার যে দাবি করা হয়, তা বিভ্রান্তিকর। ওয়ার্ক পারমিট ভিসা অনুমোদনের জন্য ৬০ দিন বা তার বেশি সময় লাগতে পারে। তাই তাড়াহুড়ো না করে সঠিক ও মূল অনুমোদনের জন্য ধৈর্যসহকারে অপেক্ষা করা প্রয়োজন।
গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা:
দালাল বা প্রতারকদের প্রলোভনে পড়ে অবৈধ উপায়ে আবেদন করবেন না। ভিসা প্রক্রিয়া আইনগতভাবে সম্পন্ন করা আবশ্যক, অন্যথায় শেষ পর্যায়ে আবেদন বাতিল হতে পারে। আপনার কাজের ভিসার আবেদন অবশ্যই রোমানিয়ার কোনো অফিস বা অনলাইনে উল্লেখিত নিয়মে জমা দিতে হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন