ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫

জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে গুচ্ছগ্রাম

বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৫, ০৭:৩০ এএম

বাগেরহাট সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নে জোয়ারের পানি ও বৃষ্টির ফলে বেড়িবাঁধ উপচে আশ্রয় প্রকল্প একের আওতাধীন গুচ্ছগ্রাম ও আশপাশের লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এতে গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার, ব্যাহত হচ্ছে দৈনন্দিন জীবনযাত্রা।

সরেজমিনে দেখা যায়, যাত্রাপুরের গুচ্ছগ্রামে জোয়ারের তীব্রতা এবং অব্যাহত বৃষ্টির কারণে এলাকাটি প্রতিনিয়ত পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। রান্নাবান্না, চলাচল, স্কুলে যাওয়া- সবকিছুতেই দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ১১৯টি পরিবার, যাদের মধ্যে ৭০-৮০টি পরিবার এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। পানিবন্দি হয়ে গেছেন শিশু, বৃদ্ধসহ সব বয়সি মানুষ। শিশুদের অনেকের দেহে চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। পানিতে ডুবে আছে বসতঘর, রান্নাঘর, চলাচলের পথ। গুচ্ছগ্রামের শতাধিক শিক্ষার্থী জলাবদ্ধতার কারণে স্কুলে যেতে পারছে না।

আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দা তহমিনা বেগম বলেন, ‘প্রতিবছর একই দুর্ভোগ। বারবার বললেও কেউ শোনে না। শুধু আশ্বাস মেলে, কিন্তু বেড়িবাঁধ টেকসই করা হয় না।’

অন্য এক বাসিন্দা মাজেদা বেগম বলেন, ‘ঘরের ভেতর পানি ঢুকে গেছে। রান্না করার জায়গা নেই। বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না। পানির কারণে শরীরে ঘা উঠছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা হাসান মাহামুদ জসীম বলেন, ‘প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী আছে গুচ্ছগ্রামে, কিন্তু তারা নিয়মিত স্কুলে যেতে পারে না। বেড়িবাঁধ নিচু এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বছরজুড়েই এখানে জলাবদ্ধতা লেগে থাকে।’
লতা বেগম বলেন, ‘বছরের পর বছর আমরা এমন দুর্ভোগে আছি। কেউ খবর নেয় না। পানি নেমে গেলেও কাদায় চলাচল করা যায় না। ভাবছি এই এলাকা ছেড়ে চলে যাব।’

এ বিষয়ে বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি। নদীর পানির উচ্চতা বেশি হওয়ায় এবং আশ্রয় প্রকল্পের জায়গা নিচু হওয়ায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। দ্রুত বালু ভরাট ও বেড়িবাঁধ উঁচু করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ অবস্থায় দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সুষ্ঠু পানি নিষ্কাশনের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তারা আশঙ্কা করছেন, যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।