জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এবং পরবর্তীতে আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের মিছিলে অংশ নেওয়ার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের দুই শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাদের কক্ষে তালা লাগিয়ে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে শিক্ষার্থীরা বিভাগের অধ্যাপক আবু হুসাইন মোহাম্মদ আহসান এবং ড. সাদিক হাসানের কক্ষে তালা দেন এবং তাদের সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে বিভাগীয় চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
শিক্ষার্থীরা ওই দুই শিক্ষকের কক্ষের দরজায় তাদের ছবির ওপর 'আওয়ামী লীগের দালাল' লিখে পোস্টার লাগিয়ে দেন এবং কক্ষ দুটিকে 'দালালের রুম' হিসেবে চিহ্নিত করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সরাসরি বিরোধিতা করা সত্ত্বেও এই দুই শিক্ষক এক অদ্ভুত ক্ষমতাবলে এখনও বিভাগে ক্লাস নিচ্ছেন।
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে তাদের বিভাগের সব একাডেমিক কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু বছর না পেরোতেই তারা নতুন ব্যাচের ক্লাস নিচ্ছেন এবং ৫১তম ব্যাচের রিসোর্স সুপারভাইজারের দায়িত্বও পেয়েছেন, যদিও ওই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাদের বয়কট করেছিলেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, অধ্যাপক সাদিক হাসান জুলাই আন্দোলনের সরাসরি বিরোধিতা করেছেন এবং ১৫ই জুলাই ছাত্রলীগের নির্মম হামলার পর আহত শিক্ষার্থীদের নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে হামলার পক্ষে সাফাই গেয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, এমন আত্মঘাতী স্লোগান দিলে নাকি মার খাওয়াটা স্বাভাবিক। হাসিনার পতনের পরেও তিনি এখনও দোর্দণ্ড প্রতাপে ক্লাস নিচ্ছেন।
শিক্ষার্থীরা তাকে বয়কট করতে চাইলে সিজিপিএ কমিয়ে দেওয়াসহ নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
একইভাবে অধ্যাপক আবু হুসাইন মোহাম্মদ আহসানের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্র নির্যাতন ও হত্যার পরও তিনি নীল দলের হয়ে মিছিল করেছেন।
এখনও বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, যেমন—গেস্ট টিচার আনায়ন, কোর্স কর্ডিনেশন, শিক্ষক নিয়োগ ও থিসিস সুপারভাইজার এসাইন করার ক্ষেত্রে তার সিদ্ধান্তই প্রাধান্য পায়।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিভাগ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিরোধিতাকারী শিক্ষকদের বিষয়ে 'ডাবল স্ট্যান্ডার্ড' দেখাচ্ছে এবং তাদের প্রশ্রয় দিচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে লোক প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাজনিন ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।