ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫

প্রকল্পের অর্থ লুট করে পলাতক চেয়ারম্যান

মনির মোল্যা, সালথা (ফরিদপুর)
প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৫, ০৭:৪৫ এএম

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়ার অপসারণের দাবি উঠেছে। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ ও অনিয়মের অভিযোগে তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।

গতকাল বুধবার দুপুরে সালথা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা এই অভিযোগ তুলে ধরেন এবং দ্রুত চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবি জানান।

লিখিত বক্তব্যে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আবু মোল্যা বলেন, চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে পরিষদের বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দ পাওয়া অর্থ আত্মসাৎ করেছেন ফারুকুজ্জামান। অধিকাংশ প্রকল্পে অর্ধেক কাজ শেষ হলেও পুরো টাকার বিল তুলেছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, সাধারণ ইউপি সদস্যদের উপেক্ষা করে চেয়ারম্যান এককভাবে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। তার অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে পরিষদে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৫ আগস্ট থেকে চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। পরিষদে অনুপস্থিত থাকায় জনগণ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ অবস্থায় তাকে অপসারণ করে প্যানেল চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পরিষদের কার্যক্রম চালানোর দাবি জানান সদস্যরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৬ সালে প্রথমবার নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ফারুকুজ্জামান। এরপর থেকে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি। তবু ২০২১ সালে ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর আশীর্বাদে পুনরায় নির্বাচিত হন তিনি। পরবর্তী সময়ে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। টিআর, কাবিখা, কাবিটা, ওয়ান পার্সেন্টসহ বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ লোপাটের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ভিজিডি, গর্ভবতী, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড বানাতে অর্থ নেওয়া, এমনকি ভিজিএফ চাল বিক্রির অভিযোগও উঠেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ রিংকুর গাড়ি ভাঙচুর মামলাসহ তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। সালথা থানার ওসি মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘আমরা তাকে গ্রেপ্তারের জন্য একাধিকবার অভিযান চালিয়েছি। চেষ্টা চলছে।’

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, ‘আমরা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে।