রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেও পাস করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশীর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় তদন্তে গঠিত তিন সদস্যের কমিটি ছয় মাসেও কোনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি, যা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
ঘটনার সূত্রপাত ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত স্নাতকোত্তরের প্রথম সেমিস্টারের মিডটার্ম পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ রয়েছে, ঐশী পরীক্ষায় অংশ না নিয়েই উত্তীর্ণ হয়েছেন। অভিযোগ সামনে আসার পর ২২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কিন্তু দীর্ঘ ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ পায়নি।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও পাস করানো দুর্নীতির চরম উদাহরণ। তাদের দাবি, ঐশী ছাত্রলীগের প্রভাব ব্যবহার করে পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও উত্তীর্ণ হয়েছেন। তার সহপাঠীরাও জানিয়েছেন, তারা ঐশীকে মিডটার্ম পরীক্ষার হলে উপস্থিত থাকতে দেখেননি।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথমে ফোন রিসিভ না করলেও পরে হোয়াটসঅ্যাপে ঐশী পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার দাবি করেন। তবে তার বক্তব্য ও উপস্থিতির বাস্তব তথ্যের মধ্যে অসংগতি থাকায় বিতর্ক আরও বেড়ে যায়। উল্লেখ্য, ১৬ জুলাই ছাত্রলীগের হামলায় নিহত আবু সাঈদকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ঐশী আত্মগোপনে চলে যান।
এ ঘটনায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্ত শিক্ষক, গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিনকে অর্থ দপ্তরের পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়। তবে তার বিরুদ্ধে অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল-আমিন বলেন, ‘যারা আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তাদের নেত্রী কীভাবে পরীক্ষা না দিয়ে পাস করেন? এখানে শিক্ষকেরও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তদন্ত হলেও ফল আসছে না। শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের ওপর থেকে আস্থা হারাচ্ছে।’
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তানজিউল ইসলাম জীবন বলেন, ‘প্রতিবেদন প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে রয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে তা জমা দেওয়া হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :