বরেন্দ্র অঞ্চলের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকটে জর্জরিত। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে ১২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে মাত্র ৯৫ জনই দায়িত্ব পালন করছেন। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে যথাযথ জনবল কাঠামোর অভাবে পদায়ন, পদোন্নতি ও বেতনভাতায় বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। মানবসম্পদ অব্যবস্থাপনায় বিএমডিএতে প্রায় দুই যুগ ধরে চলছে এমন নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা। তারা সুষম জনবল কাঠামো অনুমোদনের দাবি করেন।
প্রতিষ্ঠার পর ২০০৩ ও ২০০৮ সালের পর আর কোন জনবল নিয়োগ হয়নি। অতীতে ১ হাজার ২৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকলেও বর্তমানে কর্মরত ৭০৩ জন। বাকি জনবলের চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে অস্থায়ী ও আউট সোর্সিং থেকে। ২০০৬-০৭ সালে ৬৫০ জন জনবল নিয়ে একটি জনবল কাঠামো অনুমোদন করা হয়। কিন্তু তার পৃষ্ঠাংকন হয় নাই। বর্তমানে কর্তৃপক্ষের কাজ আরো বেগবান ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য ১ হাজার ৯১১ জন জনবলের সমন্বয়ে একটি প্রস্তাবিত জনবল কাঠামো মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা আছে বলে জানা গেছে। তবে বিএমডিএ-এর বর্তমান নির্বাহী পরিচালক (ইডি), মো. তরিকুল আলম (অতিরিক্ত সচিব) নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে কোন অস্থিরতা ছাড়াই চলছে। সদ্য প্রয়াত ড. মো. আসাদ উজ জামানের মৃত্যুতে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান পদটি শূন্য রয়েছে।
নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলার শিতলডাঙ্গা গ্রামের আতাউর রহমান (৫৬) বলেন, বিএমডিএ উত্তরাঞ্চলের জন্য আশীর্বাদ। দেশের শস্যভা-ার পরিণত হওয়ার পেছনে মুখ্য ভূমিকায় বিএমডিএ।
১৯৮৫ সালে বরেন্দ্র সমন্বিত এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প (বিআইএডিপি) থেকে জনবল নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম চালু করা হয়। ১৯৯২ সালে নতুন নামকরণ করা হয় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। ২০১৮ সালে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ পাস হয় সংসদে। গভীর নলকূপ স্থাপন, নিবিড় বনায়ন ও বৃক্ষরোপণ, সেচনালা নির্মাণ, খাল খনন ও গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের ১৬টি জেলার (রাজশাহী বিভাগ থেকে পরে ৮টি জেলা নিয়ে রংপুর বিভাগ গঠিত হয়।) সব মিলে ১৩৫টি উপজেলা এলাকায় বিএমডিএর কার্যক্রম চলমান। এই সংস্থার নানা কর্মসূচিতে দেশের উত্তরাঞ্চল খাদ্যশস্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। ঘটেছে বিপুল পরিমাণ গাছগাছালির সবুজ সমারোহ।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) (পরিকল্পনা অনুবিভাগ) মো. শামসুল হোদা বলেন, জনবল কাঠামোর বিষয়টি কৃষি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিবে বলে আশা করছি।