রাজশাহীর বাঘায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নালা, ক্যানেল ও ড্রেন জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। পরিকল্পিত পুকুর খনন, ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের অভাব ও অবৈধ দখলদারিতার কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে পড়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই বাঘা ও আড়ানী পৌরসভাসহ ৭ ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে।
বাঘা পৌরসভায় নির্মিত ড্রেনগুলো সড়কের তুলনায় উঁচু হওয়ায় পানি জমে না। ফলে সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে সওজের অসমাপ্ত ১ কিলোমিটার সড়কে চলাচলে ভোগান্তি বেড়েছে, যানবাহন ও পথচারীরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তেপুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, হরিপুর ও শাহদৌলা সরকারি কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা কয়েকশ ছাড়িয়েছে।
আড়ানি ও বাউসা ইউনিয়নের বেশ কয়েকশ পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। দখলদারিতার কারণে গুরুত্বপূর্ণ ক্যানেল-ড্রেনের পানির চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে কৃষিজমি পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।
বাঘা উপজেলার মুর্শিদপুর থেকে নওটিকা পর্যন্ত প্রায় ৮.২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের খালটি ২০১৯ সালে পুনঃখনন করা হলেও তা কার্যকর হয়নি। নদীর মুখে বালুচর সৃষ্টি হওয়ায় নদী দূরে সরে যাওয়ায় খালের কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা কাজের ধারাবাহিকতা না থাকা, ড্রেনগুলো প্লাস্টিক বর্জ্যে ভরাট ও নিয়মিত পরিচ্ছন্নতার অভাবের কারণে প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন।
বিএমডিএ’র পুঠিয়া জোনের সহকারী প্রকৌশলী হানিফ শিকদার জানান, মামলার কারণে প্রকল্পের কাজ এখনো শেষ করা সম্ভব হয়নি এবং প্রকল্পের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বাঘা পৌর প্রশাসক শাম্মী আক্তার জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল উদ্ধার, ড্রেন পরিষ্কার ও বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের কাজ চলছে। অসমাপ্ত সড়কের কাজ শুরুর জন্য সওজকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা আফরিন বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় কাজ বিলম্বিত হয়েছে, মেয়াদ শেষ হওয়ায় কাজ বন্ধ আছে। মন্ত্রণালয়ে পুনরায় কাজ শুরু করার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে, যার ফলে আরও চার থেকে পাঁচ মাস সময় লাগতে পারে।