ঢাকা শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫

শিক্ষককে আটকে রেখে বিএনপি নেতার চাঁদা দাবি

‎ভোলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৫, ০৬:০৮ এএম

ভোলার চরফ্যাশনে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে এক মাদ্রাসাশিক্ষককে প্রকাশ্যে মারধর করে আটকে রেখে ৬ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে অলিখিত স্টাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার ভুক্তভোগী শিক্ষক বাদী হয়ে বিএনপি নেতাকে আসামি করে আদালতে মামলা করেছেন।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষকের নাম, মাওলানা রুহুল আমিন। তিনি চরফ্যাশন উপজেলা স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসাশিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং চরফ্যাশন পৌরসভা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। আর অভিযুক্তের নাম, মো. জাহাঙ্গীর। তিনি উপজেলার দুলারহাট থানার নুরাবাদ ইউনিয়ন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং নুরাবাদ ইউনিয়ন বিএনপি নেতা। গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাওলানা রুহুল আমিন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, রুহুল আমিন স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ও এবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। গত ৩ আগস্ট রাত ৮টার দিকে রুহুল আমিন অন্য এবতেদায়ি শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করতে উপজেলার দুলারহাট বাজারে যায়। শিক্ষকদের নিয়ে দুলারহাট বাজারে আবদুল্লাহ হোটেলে চা খাওয়ার জন্য বসলে বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে কয়েকজন মিলে তাকে বলে, ‘বিগত ১৭ বছর বহু টাকা ইনকাম করেছো। এখন আমাদের ৬ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে।’ চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা রুহুল আমিনকে হোটেল থেকে টেনে বের করে লোহার রড দিয়ে মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে।

রুহুল আমিন বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে দুলারহাট স্থানীয় বিএনপির পার্টি অফিসে নিয়ে আমাকে আটকে রেখে আবারও পিটিয়ে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে রাখে। এবং হত্যার হুমকি দিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করে। আমার কাছ থেকে তিনটি অলিখিত স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে ছেড়ে দেয়। তাদের মারধরে গুরুতর অসুস্থ হলে স্থানীয়রা আমাকে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এখনে হাসপাতালে ভর্তি। বিষয়টি রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে শিক্ষক সমিতির নেতাদের জানিয়ে আদালতে মামলা করেছি। আমাকে মারধর ও অলিখিত স্টাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে, আমি জাহাঙ্গীরের কঠিন শাস্তি দাবি করছি।’

‎জানতে চাইলে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এলাকায় কয়েকটি স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসাকে এমপিওভুক্ত, নবায়নসহ বিভিন্ন অজুহাতে ৬ লাখ টাকা নিয়েছেন মাওলানা রুহুল আমিন। কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত এবং নবায়ন করতে পারেনি। তাই তার কাছে টাকা ফেরত চাই। সে টাকা দেই-দিচ্ছি বলে তালবাহানা করতে থাকে। ৩ আগস্ট দুলারহাট বাজারে তাকে পেলে সে টাকা দেবে বলে স্বীকারোক্তি দেয়। তার পরদিন টাকা দেবে বলে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরও দেন তিন। যেহেতু তিনি আদালতে মামলা করেছেন তার জবাব আমি আদালত দেব।’

‎দুলারহাট থানার ওসি আরিফ ইফতেখার জানান, ‘ঘটনাটি শুনেছি। মাওলানা রুহুল আমিন থানায় অভিযোগ করেনি। যেহেতু আদালতে মামলা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’