ঢাকা শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫

বিহারের ‘মৃত ভোটারদের’ সঙ্গে চা পান করলেন রাহুল গান্ধী

ভিনদেশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৫, ০৬:৫৮ এএম

কয়েক দিন আগে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ‘ভোট চুরি’র অভিযোগ করে বিরোধী সংসদ সদদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনমুখী যাত্রা করেছিলেন বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস জানিয়েছে, এবার তিনি বিহারের ভোটার তালিকায় ‘মৃত বলে নাম বাদ পড়া’ সাতজন ভোটারের সঙ্গে নিজের বাসভবনে চা খেয়েছেন, আলোচনা করছেন।

কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সেই ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। রাহুল নিজেও তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, চারজন নারী ও তিনজন পুরুষ ভোটারের সঙ্গে কথা বলছেন রাহুল। তাদের হাতে চা তুলে দিচ্ছেন। সবাই মিলে চা পান করছেন। তার আগে সবার সঙ্গে কথাও বলেছেন কংগ্রেস নেতা।

রাহুল গান্ধী ‘মৃত বলে ভোটার তালিকা থেকে নাম দেওয়া’ ব্যক্তিদের অভ্যর্থনা জানিয়ে নিজের অফিস কক্ষে নিয়ে যান। লম্বা টেবিলের চারপাশে বসেন তারা। রাহুল প্রশ্ন করেন, ‘শুনলাম আপনারা আর বেঁচেই নেই।’

এ সময় একজন জানালেন, ‘আমাদের মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।’ রাহুলের প্রশ্ন, ‘কীভাবে জানতে পারলেন?’ জবাবে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘ভোটার তালিকা পরীক্ষা করে দেখলাম।’

ভিডিওতে রামইকবাল রায়ের একটি ভোটার কার্ড দেখানো হয়েছে। সেখানে ১৯৫৯ সালে জন্মানো রামইকবালের বাবার নাম আছে লক্ষ্মী রায়।

এরপর রাহুল বলেন, ‘আপনারা ভোটার তালিকা পরীক্ষা করে দেখলেন, আপনাদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। আপনাদের মেরে ফেলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন আপনাদের মেরে ফেলল? আপনাদের কী মনে হয়, এ রকম কত মানুষ আছেন?’

একজন জবাব দেন, একটা পঞ্চায়েত এলাকায় অন্তত ৫০ জনের এই হাল হয়েছে।

রাহুলের প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, তারা সবাই একই বুথের ভোটার নন। তারা তিন-চারটি আলাদা আলাদা বুথের ভোটার ছিলেন। সেখানে আরও এ রকম মানুষ আছেন, যাদের নাম এভাবে বাদ পড়েছে।

একজন রাহুলকে বলেন, তার বাড়িতে কমিশনের কর্মীরা এসেছিলেন। তার কাছ থেকে নথি চেয়েছিলেন। তিনি আধার কার্ড, ব্যাংকের পাসবইয়ের ফটোকপি ও ছবি দিয়ে এসেছিলেন। কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ঠিক আছে। তারপর দেখেন যে তাকে মৃত ঘোষণা করে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

ওই ব্যক্তি বলেন, তারা বিহারের সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী ও আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের আসন রাঘোপুরের ভোটদাতা। তাদের মনে হচ্ছে, তেজস্বী যাদবকে হারানোর জন্যই এ কাজ করা হচ্ছে।

একজন বলেন, মহাজোট মিলে বিহারকে বাঁচাক। রাহুল জবাবে বলেন, ‘আরজেডি ও আমাদের দল মিলে এটা বন্ধ করার চেষ্টা করছি।’ তারপর তিনি বলেন, ‘বন্ধ করে দেব, বন্ধ করে দেব। ভোট চুরি হতে দেব না।’

এরপর রাহুল এই ভিডিও ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে পোস্ট করে লিখেছেন, ‘জীবনে কখনো মৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে চা খাওয়ার সুযোগ হয়নি। এই অনুভবের জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

৭ আগস্ট রাহুল গান্ধী সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোট চুরির অভিযোগ এনেছেন। নির্বাচন কমিশন রাহুলের কাছে এ বিষয়ে নথি চেয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেছে।

কর্ণাটকের মুখ্য নির্বাচনি কর্মকর্তা (সিইও) গত রোববার ভোট চুরির বিষয়ে অভিযোগের তদন্ত করার জন্য রাহুল গান্ধীর কাছ থেকে নথিপত্র চেয়েছেন।