ঢাকা বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

দৌলতপুরে ৪ বছরেও মেলেনি বৃত্তির টাকা

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ১০:০৪ এএম
কুষ্টিয়া
  • ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা চার বছরেও প্রাপ্য অর্থ না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বৃত্তিপ্রাপ্তদের অভিযোগ, বারবার শিক্ষা অফিস ও ব্যাংকে যোগাযোগ করেও কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি, শুধু আশ্বাসই পেয়েছেন।

দৌলতপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে উপজেলার ২৮৪টি বিদ্যালয় থেকে ২ হাজার ৩১০ জন পরীক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে মেধা ও সাধারণ গ্রেডে মোট ১৯৩ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পান। কিন্তু বৃত্তি ঘোষণার চার বছর পার হলেও এখনো কেউ অর্থ পাননি।

২০২২ সালে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়া তারাগুনিয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু ওবাইদুল্লাহ সিদ্দিক (বর্তমানে অষ্টম শ্রেণি) বলেন, ‘প্রতি মাসে ৩০০ টাকা পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনো এক টাকাও পাইনি। এমন হলে বৃত্তি পেয়ে লাভ কী?’

অভিভাবক বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘টাকা বড় ব্যাপার নয়। কিন্তু জীবনের শুরুতেই এমন অভিজ্ঞতা ওদের মেধা বিকাশে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াতে পারে। সরকারের উচিত দ্রুত সমাধান করা।’

অন্য অভিভাবক তহমিনা খাতুন বলেন, ‘আমার মেয়ে পরিশ্রম করে বৃত্তি পেয়েছিল। কিন্তু আজও সেই স্বীকৃতি মেলেনি। এতে সে মনোবল হারাচ্ছে।’

তারাগুনিয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ‘২০২২ সালে আমাদের বিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছিল। কিন্তু অর্থ না পাওয়ায় অভিভাবকরা বারবার অভিযোগ করছেন। সম্ভবত প্রশাসনিক জটিলতার কারণে বিলম্ব হচ্ছে।’

দৌলতপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘আমি সদ্য যোগদান করেছি। যতদূর জানি, যাচাই-বাছাই শেষে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। অর্থ ছাড়ের বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর দেখে। শুধু দৌলতপুর নয়, সারা দেশেই একই সমস্যা রয়েছে।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার কামাল হোসেন জানান, ‘বৃত্তির অর্থ সরাসরি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের হাতে থাকে না। শিক্ষার্থীরা যেসব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, সেগুলোই দেখভাল করে।’

দৌলতপুর সরকারি পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইয়ার আলী বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের বৃত্তির কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছি। তবে এখনো তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হয়নি। কেন হয়নি, তা জানি না।’

এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আপাতত কিছু জানি না। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে পরে জানাতে পারব।’